ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উগ্রবাদে জড়িয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বঞ্চনাবোধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৮
উগ্রবাদে জড়িয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বঞ্চনাবোধ সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, উগ্রবাদে জড়িয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বঞ্চনাবোধ। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশে মুসলিমরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। সেই বোধ থেকে কিছু তরুণ উগ্রবাদে জড়িয়ে যাচ্ছে।  

শনিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সহিংস উগ্রবাদ বিরোধী যুব সংলাপে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইউএনডিপির সহায়তায় এ সংলাপের আয়োজন করে সিটিটিসি।

মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়া স্বত্ত্বেও তারা ভুল ব্যখ্যার কারণে জঙ্গিবাদের দিকে ধাবিত হয়ে যায়। এসব বঞ্চনার প্রতিবাদ আইনগতভাবে আমরা অবশ্যই করব। কিন্তু এর কারণে কেন আমরা প্রতিবেশিকে হত্যা করব?

কারাগারে গিয়েও অনেক সাধারণ অপরাধী উগ্রবাদে জড়িয়ে যেতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একজন সাধারণ অপরাধী যদি কোনো জঙ্গির সঙ্গে কারাগারে পাশাপাশি থাকে তাহলে সেই সাধারণ অপরাধী উগ্রবাদে জড়িয়ে যেতে পারে। এজন্য কারাগারগুলোতে কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে।

ইসলামে জোর-জবরদস্তির জায়গা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের এই ভ্রান্ত মতবাদের বিরুদ্ধে কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা সাসপেক্টেড উগ্রবাদী মাতবাদে যারা জড়িয়ে যেতে পারে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিভিন্ন অভিযানে যারা মারা গেছে তাদের পরিবারের সঙ্গেও বসেছি।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, যারা প্রাণভরে জাতীয় সঙ্গীত গায়, আমরা মনে করি বাঙালি সংস্কৃতি উগ্রবাদের থাবা থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। যারা লালন-রবীন্দ্রনাথের গান শোনে তারা কখনোই জঙ্গিবাদে জড়াতে পারে না।

ইউএনডিপির পক্ষে রবার্ট স্টোরম্যান বলেন, পরিসংখ্যানের দিক থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে উগ্রবাদের মাত্রা কম। র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ২২তম পর্যায়ে রয়েছে। গবেষণালব্ধ ফলাফল অনুযায়ী কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষ জঙ্গিবাদে জড়ানোর প্রমাণ নেই। যেকোন শ্রেণি-পেশার মানুষ উগ্রবাদে জড়াতে পারে। এ কারণে সামাজিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। সামান্য কিছু সংখ্যক মানুষ উগ্রবাদে জড়ালেও এর ব্যপ্তিটা বিশাল।

সংলাপে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। উগ্রবাদে জড়ানোর কারণ সম্পর্কে ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবিরা সুলতানা চামেলী বলেন, আমরা সমসাময়িক ঘটনা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখি না। বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়ানোর প্রভাব ফেলে আমাদের ওপর। তাই আমাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব নবনীতা চৌধুরী বলেন, কতোদিন আর অন্যের ঘাড়ে দোষ দিব? বাবা-মা সময় দিচ্ছে না, আমরা কতোটা বাবা-মায়ের কাছে নিজেদের তুলে ধরছি? তাই নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ না রেখে আমাদের মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে।

সংলাপে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মেহের আফরোজ শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শবনম আজিম, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা রহমানসহ জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকরা অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
পিএম/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।