২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ‘রূপকল্প ২০২১’ তুলে ধরে দেশের সাধারণ মানুষ তথা তরুণ সমাজকে লক্ষ্য করে আওয়ামী লীগ প্রণীত এ ‘রূপকল্প ২০২১’-এ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা স্থান পেয়েছে।
‘বাংলাদেশ: অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির দশ বছর’ এ সংকলনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইংয়ের উদ্যোগ ও অনুমতিক্রমে জিনিয়াস পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংকলনটির প্রধান সম্পাদক হলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম, গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্তি প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিবমামুন অর রশিদ এবং প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব মু. আশরাফ সিদ্দিকী বিটু।
বিভিন্ন মন্ত্রণলায় ও বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য/উপাত্তের ভিত্তিকে সংকলনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। সংকলনটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা।
সংকলনে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয় পেয়ে সরকার গঠন করে। পাঁচ বছর মেয়াদ শেষে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট আবারও নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে তৃতীয়বারের মতো সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।
এই দশ বছরে কৃষি, শিক্ষা,স্বাস্থ্য, অবকাঠামো উন্নয়নসহ আর্থ-সামাজিক সব খাতে বাংলাদেশ অর্জন করেছে বিস্ময়কর অগ্রগতি। ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতিও মিলেছে। সংকলনে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়েছে এ সংকলনে। বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২০ হাজার ৪৩০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ, জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশে উন্নীতকরণ, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমানা নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ, কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড এবং ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা, বিনা জামানতে বর্গা চাষিদের ঋণ দেওয়া, সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, দারিদ্র্যের হার ২০০৫-০৬ সালের ৪১ দশমিক ৫ থেকে ২০১৭-২০১৮ বছরে ২১ শতাংশে হ্রাস, ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়, মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৭৫১ ডলারে উন্নীতকরণ ইত্যাদি।
এছাড়াও সরকারের দশ বছরে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং দ্বিপাক্ষিক ফোরামে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য বিমোচন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা, নারীর ক্ষমতায়নসহ ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বাংলাদেশ সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে সে দিকগুলোও তুলে ধরা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ, এমডিজি ও সাউথ-সাউথ পুরস্কার, ইউনেস্কো কর্তৃক “শান্তিবৃক্ষ”, এজেন্ট অব চেঞ্জ, প্লানেট ৫০-৫০, গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, আপিএস-এর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডসহ বহুসংখ্যক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হওয়ার দিকগুলোও স্থান পেয়েছে এ সংকলনে।
পাবানার ঈশ্বরদীতে পারমাণবিক ক্লাব ও এলিট স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য হওয়া, মেট্রোরেল স্থাপন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর কাজ নির্মাণ, কঠোরভাবে জঙ্গিবাদ দমন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে সরকারের দৃঢ় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়া ২০১৪ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ভিশন ২০৪১’ ধরে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকারের বিষয়ও উঠে এসেছে।
আরও রয়েছে ‘ভিশন ২০৪১’ ধরে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তেলার অঙ্গীকার, শত বছরের পরিকল্পনা ‘ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’। ২১০০ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে তা এ পরিকল্পনায় অন্তভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এক উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবনের স্বাদ পাবে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে সেটির অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
এমইউএম/এসআরএস