ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ট্যুরিস্ট ভিসায় এসে স্থায়ী বসবাস, প্রতারণা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৮
ট্যুরিস্ট ভিসায় এসে স্থায়ী বসবাস, প্রতারণা র‌্যাবের অভিযানে আটক প্রতারক চক্রের সদস্যরা

ঢাকা: ব্যবসা বা ফুটবলের সূত্র ধরে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের লোকজন ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে আসেন। নির্ধারিত ভিসার মেয়াদ শেষ হলে পাসপোর্ট ফেলে দিয়ে হয়ে যান অবৈধ। এরপর দীর্ঘমেয়াদে দেশে বসবাস করে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন তারা।

ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে এদেশের মানুষের সঙ্গে গড়ে তোলেন সখ্যতা। এরপর তাদের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমাণ অর্থ।

বুধবার (২৮ নবেম্বর) দিনগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বসবাসরত আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ১৪ জন নাগরিককে আটক করেছে র‌্যাব-১। এরপর তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে বিভিন্ন অপকর্মের কথা বেরিয়ে আসে।

আটকদের মধ্যে নাইজেরিয়ার ৭ জন, উগান্ডার ২, ক্যামেরুনের ১, কঙ্গোর ১, লাইবেরিয়ার ১, তানজানিয়ার ১ এবং মোজাম্বিকের ১ নাগরিক রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

তিনি বলেন, এই নাগরিকরা মূলত ফুটবল খেলা ও বিভিন্ন ব্যবসার নামে বাংলাদেশে আসেন ট্যুরিস্ট ভিসায়। ৩-৬ মাস পর ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও একেকজন ২-১০ বছর ধরে বাংলাদেশে রয়ে গেছেন। তারা ১০-১২ জন করে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন।

এদের আটকের সময় ২৯টি মোবাইল সেট, ২টি ল্যাপটপ, নগদ ১ লাখ ৫৮৫ টাকা, ১ হাজার ১৩ ডলার ও বিভিন্ন ব্যাংকের কয়েকটি চেক উদ্ধার করা হয়। চেকের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলেই তাদের বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য বেরিয়ে আসে বলে জানান ওই র‌্যাব কর্মকর্তা।

র‌্যাবের বরাতে জানা যায়, আটকরা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন। তারা নিজেদের আফগানিস্তানে যুদ্ধরত সৈনিক বা জাতিসংঘের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে বন্ধুর জন্য দামি উপহার পাঠাবেন বলে প্রলোভন দেন।

কয়েকদিন পর এ চক্রেরই বাংলাদেশি সদস্যরা ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে ফোন দিয়ে কাস্টমস বা ডাক বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। ট্যাক্স ফি বা অবৈধ জিনিসের কথা বলে উপহার ছাড়ের জন্য বিভিন্ন অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয় চক্রটি।

এছাড়া, কখনো কখনো সাদা কাগজে রাসায়নিক মিশিয়ে ডলার তৈরির প্রলোভন দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্র।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক আরো বলেন, এ চক্রটি প্রতিমাসে ৩০-৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এদেরকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে কয়েকজন বাংলাদেশি সহায়তা করেন। সেসব বাংলাদেশিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, এ চক্রের মূল হোতা হিসেবে মার্ক নামে নাইজেরীয় এক নাগরিককে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে এখনো আটক করা সম্ভব হয়নি, আমরা খবর পেয়েছি তিনি দেশ ছেড়েছেন। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বের করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৮
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।