সুতোর স্তূপেধনুকের আঘাত পড়ছিল যেন বিরামহীন। ধনুকের আঘাতে স্তূপ তখন প্রায় তুলোধুনো।
খসখস শব্দ তুলে তুলা ভর্তি খোলে সেলাইয়ের কাজ শেষ হলে তা লেপ, তোষক ও বালিশে পরিণত হয়ে যাচ্ছিলো। পরে সেগুলো দোকানোর বিভিন্ন জায়গা সাজিয়ে রাখা হয়। যেন ক্রেতা সাধারণের দৃষ্টি কাড়তে পারে।
বগুড়া শহরের রেলস্টেশন থেকে ফতেহ আলী ব্রিজ পর্যন্ত এলাকায় রেললাইনের দু’পাশ দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে লেপ-তোষক তৈরির অসংখ্য ব্যবস্থা-প্রতিষ্ঠান। এসব দোকানে সারা বছরই চাহিদা অনুযায়ী কমবেশি লেপ, তোষক ও বালিশ তৈরি হয়ে থাকে।
তবে প্রত্যেক বছর শীতের মৌসুম শুরু হওয়ার আগ থেকেই এসব সামগ্রী বানানোর চাহিদা অনেকটা বেড়ে যায়। শীতের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব সামগ্রীর চাহিদা ক্রমেই বাড়তে থাকে। সঙ্গে দামও বাড়তে থাকে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে দোকানি আবু হানিফ বাংলানিউজকে জানান, শীতের সঙ্গে লেপ, তোষক ও বালিশ তৈরির সামগ্রীর দাম বেড়ে যায়। এ কারণে তারাও কিছুটা দাম বাড়াতে বাধ্য হন। প্রত্যেক শীত সামগ্রীর বিপরীতে তারা বছরের অন্য সময়ের মতোই লাভ করে থাকেন বলে এ দোকানি দাবি করেন।
দেলোয়ার হোসেন, জমির উদ্দিনসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, তারা তিন ধাপে মাল বিক্রি করে থাকেন। এরমধ্যে অগ্রিম, তাৎক্ষণিক ও তৈরিকৃত মালামাল বিক্রি করেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক বছর শীতের শুরু থেকে শেষ অবধি তাদের ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। কারণ সারা বছরের ব্যবসা শীতের এ কয়েক মাসের মধ্যেই পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তারা আরো জানান, শীতের মৌসুম ছাড়া বছরের অন্য সময় তেমন একটা ব্যবসা হয় না। পুরো বছরের ব্যবসা শীতের এ তিন-চার মাসে করতে হয়। তবে এজন্য তাদের ব্যাপক শ্রম দিতে হয়। কাজ করতে করতে দিন-রাত পেরিয়ে যায়। খাবার সময় থাকে না।
মালিক দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, লেপ-তোষক তৈরিতে গার্মেন্টেসের সুতো ও কার্পাস তুলা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে তুলা নির্ভর করে ক্রেতার চাহিদার ওপর। সাধারণত বিভিন্ন মাপের একেকটি লেপ তৈরিতে ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয় হয়। এরমধ্যে সুতো, কাপড় ও মজুরি রয়েছে।
এছাড়া তোষক তৈরিতে দাম খানিকটা বেশি পড়ে। তুলার মান, পরিমাণ, নারিকেলের ছোবলা ও কাপড়ের ওপর নির্ভর করে একেকটি তোষকের দাম কতো পড়বে- যোগ করেন দোকান মালিক দেলোয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৮
এমবিএইচ/আরবি/