পুরনো এসব ইঞ্জিনের মধ্যে রয়েছে ১১০টি মিটারগেজ ও ৫৮টি ব্রডগেজ। ব্যয়বহুল মেরামত ও অধিক জ্বালানি ব্যয়ের মাধ্যমে মেয়াদ উত্তীর্ণ এসব রেল ইঞ্জিন চলমান রাখা হয়েছে।
রেল ইঞ্জিন বহর থেকে পুরনোগুলো প্রত্যাহার করা জরুরি বলেও মনে করে মন্ত্রণালয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে ৭০টি দক্ষিণ কোরিয়ার মিটারগেজ (এমজি) ডিজেল ইলেকট্রিক রেল ইঞ্জিন সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। একে একে সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও ৭০টি রেল ইঞ্জিন কেনা সম্ভব হয়নি। অথচ বর্তমানে রেলওয়েতে ইঞ্জিন সংকটের কারণে কোচ পরিচালনা করায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। রেল পথে যাত্রীর সংখ্যা বাড়লেও সে তুলনায় মিলছে না ইঞ্জিন।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালে রেল ইঞ্জিন কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৭ সালের জুন মাসে ৭০টি ইঞ্জিন রেল লাইনে ‘অবমুক্ত’ করার সময়সীমা ছিলো। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এগুলো সংগ্রহ করা হয়নি। এরপর জুন ২০১৮ মেয়াদে রেল ইঞ্জিন সংগ্রহ করবে বলে ঘোষণা দেয় মন্ত্রণালয়। অথচ এই মেয়াদেও হচ্ছে না। এখন ৭০টি রেল ইঞ্জিন সংগ্রহের জন্য জুন ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময় চায় মন্ত্রণালয়। এই মেয়াদেও রেল পথে ইঞ্জিনগুলো চলাচল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এ প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, 'রেল ইঞ্জিন আমরা সব সময় বিদেশ থেকে সংগ্রহ করে থাকি। এগুলো কেনা একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। ইচ্ছে করলেই রেল ইঞ্জিন রেডিমেট পাওয়া যায় না। প্রথমে টেন্ডারের মাধ্যমে ফাইন্যান্স করতে হয়। এরপর আমাদের অর্ডার পেলেই কোরিয়া এগুলো বানাতে শুরু করে। কোরিয়ার আবহাওয়ার সঙ্গে আমাদের দেশের আবহাওয়ার মিল নেই। এছাড়াও আমাদের দেশের রেলপথে কোরিয়ার রেল ইঞ্জিন চলবে না। সকল বিষয় যাচাই-বাছাই করেই আমাদের এগুতো হয়। মূলত এসব কারণেই সময় লাগে। '
২০১৯ সালের জুন মাসে ৭০টি রেল ইঞ্জিন দেশে আসবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনই সব কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা আশা করছি ৭০টি না পারলেও কিছুটা আসবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৭০টি এমজি ইঞ্জিন কেনার মাধ্যমে পুরাতন ও মেয়াদোত্তীর্ণ লোকোমোটিভ প্রতিস্থাপন করা হবে। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। সরকারি অর্থায়নের পরিবর্তে টেন্ডার ফাইন্যান্সিং হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই কোম্পানিকে দেখানো হচ্ছে। ৭০টি রেল ইঞ্জিন কেনা বাবদ আরো ৬৯৮ কোটি টাকা বাড়ছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় জনবল বাবদ ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকা বেড়েছে। সব কিছু সমন্বয় করতেই বার বার সময় বাড়ছে বলে জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৮
এমআইএস/এইচএমএস/এমকেএম