ঠিকমত ঘরের কাজ না করলেই তার চাচি নেহার সুলতানা ও তার দুই মেয়ে মারধর করতেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) দিনভর শিশুটির ওপর নির্যাতন চালান তারা।
মহল্লাবাসী বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে থানায় ঘটনাটি জানায়। পরে পুলিশ পশ্চিম মেড্ডা এলাকার রমজান মিয়ার বাসা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় লামিয়াকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়।
এ ঘটনায় রাতেই নির্যাতিত শিশুটির চাচি গৃহকর্ত্রী নেহার সুলতানা (৪৫) তার দুই মেয়ে রুমা আক্তার রুস্পা (২১) ও তাবাসুম সুমাইয়াকে (১৫) আটক করে পুলিশ।
মহল্লাবাসীর অভিযোগ, নির্যাতনের পর তাকে বেঁধে রাখা হতো। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করতে গেলে ঘরে ঢুকতে দিত না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বাসার এক ভাড়াটিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি এ বাসায় আসার পর থেকে প্রতিদিন রাতে ওই শিশুটির কান্নার শব্দ শুনতে পেতাম। এমন কি দিনের বেলায়ও তাকে মারধর করা হতো। প্রতিবাদ করতে গেলে গৃহকর্ত্রী আমাকে হুমকি-ধামকি দিতেন। আমাকে বাসা ছাড়া কথাও বলে তিনি। ’
এদিকে শিশুটিকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তার দুই চাচাতো বোন রুম্পা ও সুমাইয়া তাকে বারান্দার সামনে দুই হাত ধরে জুতা ও বেত দিয়ে মারতে থাকে। চিৎকার করলে তার মুখ চেপে ধরে রাখে। এভাবে দুই বোন মিলে দীর্ঘক্ষণ তার ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে।
শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল হক বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুই বছর বয়সে ওই শিশুটির মা-বাবা মারা যাওয়ার পর তার লালন-পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয় চাচা রমজান মিয়াকে। কিন্তু সেখানে তাকে সন্তানের আদর না দিয়ে গৃহকর্মীর মতো খাটানো হতো। ঘরের সব কাজ তাকে দিয়ে করানো হতো। কারণে-অকারণে তার চাচি ও চাচাতো দুই বোন তাকে পেটাতেন। মেয়েটির সারা শরীরে অসংখ্য ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। নির্যাতনে মেয়েটি মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সে কোনো কিছু বলতে পারছে না।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ওই পরিবারের পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮
জিপি