তৎকালীন পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মরহুম জহুর আহমেদ চৌধুরী দলীয় পতাকা এবং কুমিল্লার প্রথম প্রশাসক অ্যাডভোকেট আহমেদ আলী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধ আর নির্যাতনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা মুক্তিযোদ্ধা, মিত্রবাহিনীসহ গণমানুষের আনন্দ-উল্লাসে প্রকম্পিত হয়ে উঠে।
১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে সীমান্তবর্তী এলাকার তিনদিকে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী কুমিল্লা বিমানবন্দরে পাকিস্তানি বাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। মিত্রবাহিনীর ১১ গুর্খা রেজিমেন্টের আর কে মজুমদারের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিমানবন্দরের তিনদিকে আক্রমণ চালানো হয়। সীমান্তবর্তী বিবির বাজার দিয়ে লেফটেন্যান্ট দিদারুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল এবং অন্য দু’টি দল গোমতী নদী অতিক্রম করে ভাটপাড়া দিয়ে এবং চৌদ্দগ্রামের বাঘের চর দিয়ে এসে বিমানবন্দরের পাকিস্তানি সেনাদের ঘাঁটিতে আক্রমণ করে।
সারারাত পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাকিস্তানি বাহিনীর কিছু সেনা বিমানবন্দরের ঘাঁটি ত্যাগ করে শেষ রাতে বরুড়ার দিকে এবং সেনানিবাসে ফিরে যায়। শেষ রাতে বিমানবন্দরের ঘাঁটিতে ধরা পড়া কিছু পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে পাকসেনাদের প্রধান ঘাঁটির পতনের মধ্য দিয়ে পরদিন ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা পাকসেনা মুক্ত হয়।
এদিন ভোরে মুক্তিসেনারা শহরের চকবাজার, টমছমব্রিজ ও গোমতী পাড়ের ভাটপাড়া দিয়ে আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। তখন রাস্তায় নেমে আসে জনতার ঢল। কুমিল্লার আপামর জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে মুক্তির উল্লাসে বরণ করে নেয়। এদিন বিকেলে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মিত্রবাহিনী ও জনতার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮
আরআর