মুকুল পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামের হাজী নুরুল ইসলাম তালুকদার ছেলে।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে জুনের মাঝামাঝি সময় তিনিসহ ৮০ জন ভারতে যান।
বর্তমানে তিনি নিভৃত পল্লীতে তৈরি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র। কেন্দ্রটির নাম ‘মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র নবম সেক্টর মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১’। যেখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বই রয়েছে। এছাড়া তিনি নিজেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখেছেন পাণ্ডুলিপি। ইতোমধ্যে নিজের ইতিহাস নিয়ে পাণ্ডুলিপি লেখা শুরু করেছেন।
এছাড়াও তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর রায়হানপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্বে এবং ২৮ বছর ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। এতো কিছুর পরেও আজও নিভৃত পল্লীতে অতি কষ্টে দিন কাটচ্ছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয়ী হলেও শেষ বয়সে এসে হেরে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা মুকুল।
২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি বামনা উপজেলার ভাইজোরা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মুকুলের। এক বছর দুই মাস চিকিৎসা শেষে জীবন ফিরে পেলেও আগের মতো তিনি হাঁটতে পারেন না। স্ট্রেসারই তার এখন চলাচলের একমাত্র ভরসা।
মুক্তিযোদ্ধা মুকুল বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভাগ্যে কিছুই ঘটে নাই। সবার ভাগ্য পরিবর্তন হয়, আমার ভাগ্য আরো দুর্বিসহ হয়েছে। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার জীবন। অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ালেও ওদের ভাগ্যে একটি চাকরিও জোটেনি। সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় লাখ টাকা শেষ করে আজ আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। শেষ জীবনে এখন শুধু একটা ইচ্ছা, বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সন্তানদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ও বরগুনা জেলা পরিষদের সদস্য এমএ খালেক বাংলানিউজকে বলেন, মুকুল আমাদের একজন মুক্তিযোদ্ধা। দুর্ঘটনা হওয়ার পর আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন তা ভাবতে পারিনি। আল্লাহর রহমতে আমাদের মাঝে তিনি ফিরে এসেছেন। এখন তিনি খুবই অসহায়। আর্থিক অসচ্ছলতা এখন তার বড়ই বেদনার। এখনো তার চিকিৎসা অতিব জরুরী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮
এনটি