শুধু ২০১৭ সালে দেড় শতাধিক পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে সারাদেশে। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নিরাপদ রুট হিসেবে ঢাকা-সিলেট রেলপথকে বিবেচনা করা হলেও এবার সে রুটেও এ আতঙ্ক দেখা গেছে।
শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় স্টেশনের কাছে একের পর এক পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা।
যাত্রীরা জানান, কুলাউড়া স্টেশন ছেড়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ট্রেনটি পৌঁছালে একের পর এক পাথর ছুড়তে থাকে দুষ্কৃতিকারীরা। এতে ট্রেনের কাঁচের জানালা ভেঙে গেলেও বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যান যাত্রীরা। তাদের ভাষ্যমতে প্রায় তিন মিনিট ধরে ধারাবাহিকভাবে পাথর আসতে থাকে।
ট্রেনের যাত্রী চীনা আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলাদেশ মনিটরকারী দিদারুল ইকবাল বলেন, ট্রেনে চড়ে সিলেট থেকে ঢাকা যাচ্ছিলাম। ট্রেনটি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া স্টেশন থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার ছেড়ে আসার পর দুষ্কৃতিকারীরা চলন্ত রেলের বগিকে লক্ষ্য করে একের পর এক পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। ঘটনাচক্রে একটি পাথর প্রথম শ্রেণির বগিতে অবস্থানরত আমাদের পাশের জানালায় আঘাত হানে। জানালার পাশেই ছিল আমার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার লিমা এবং ছেলে লাবীব ইকবাল, ওই সময় তারা সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে থাকায় অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। আমি ছিলাম তাদের পাশাপাশি অপর পাশের অন্য জানালার কাছে। দুষ্কৃতিকারীদের ছোড়া পাথর আমাদের কারো গায়ে না লাগলেও জানালার ভাঙা কাঁচের টুকরো এসে আমার গায়ে লাগে।
এ ঘটনার পর সিলেট রুটের রেল যাত্রীদের মধ্যে নতুন করে পাথর নিক্ষেপ আতঙ্ক বেড়েছে। দেশব্যাপী একই কায়দায় সংঘঠিত এই পাথর সন্ত্রাসের কোনো সদস্যকে আইনের আওতায় এনে এর কারণ জানা যায়নি এখনও। এ অবস্থায় ট্রেনের যাত্রীদের বিশেষভাবে নিরাপদ থাকার কথা বলা হলেও আক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। দেশের অন্যান্য এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হলেও নিরাপদ রুট হিসেবে সিলেট অঞ্চলে তার কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে বর্তমানে এই রুটের যাত্রীদের মধ্যেও পাথর নিক্ষেপ আতঙ্ক শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে কুলাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে জানান, আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। সিলেট রুটে এরকম কোনো ঘটনা এর আগে আমাদের নলেজে আসেনি। এমন কিছু ঘটে থাকলে তা একেবারে নতুন। আমরা খোঁজ নিয়ে এলাকাটি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব।
কুলাউড়া জংশনের স্টেশন মাস্টার মফিজুল ইসলাম বলেন, এই রকম কোনো ঘটনা এর আগে আমরা এ রুটে শুনিনি। দেশের অন্যান্য জায়গায় আমরা এরকম ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। এবার যদি সিলেট রুটে তা ঘটে তাহলে রাতের যাত্রীদের মধ্যে অ্যাওয়ারনেস বিল্ড করতে হবে। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮
আরএ