শনিবার (০৮ ডিসেম্বর) সকালে ফেনী ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের আয়োজনে ‘ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ফর ‘ল’ স্টুডেন্টস’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে তিনি এ কথা বলেন।
আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, এমনভাবে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন হবে, যাতে বিচারক আবেগ আপ্লুত হয়ে যান।
সিম্পোজিয়ামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে এই জজ বলেন, যে যে ডিসিপ্লিনে পড়ালেখা করেছে কর্মক্ষেত্রেও তার সেই বিভাগে থাকা উচিত। কেউ এমবিবিএস পড়ে পুলিশ বা ফরেন সার্ভিসে কাজ করছেন। আরাব কেউ দেখা যায়, রসায়নে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে সরকারি আমলা হয়েছেন। এতে করে তার মূলধারার পড়ালেখার সঙ্গে কাজের কোনো মিল থাকে না। তাই তোমরা যারা আইন নিয়ে পড়াশোনা করছো, আমি চাইবো অবশ্যই তোমরা আইন সম্পর্কিত পেশায় আসো।
আইন পেশার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আইন একটি স্বাধীন পেশা। অ্যাডভোকেটরা সাংবাদিকতাসহ অন্যান্য স্বাধীন পেশার মতোই স্বাধীনতা ভোগ করেন। কিন্তু জজরা এত স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেন না। তাদের নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে সামাজিকতা রক্ষা করতে হয়।
তিনি আরো বলেন, আইনজীবীদের একদিনের আয় জজদের পুরো এক মাসের বেতন। তবে আইনজীবীদের অনেক পরিশ্রম করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে হয়। বলা হয়ে থাকে, আইনজীবীরা জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে রাস্তা তৈরি করেন, আর বিচারকরা সেই পথ দিয়ে হেঁটে যান।
নিজের কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটা মৃত্যুদণ্ডের রায় দিতে আমি তিন মাস সময় নিয়েছি। এরপরও অনেক রাত ঘুমাতে পারিনি। ইউরোপে যখন কারাগারগুলো সংশোধনাগার, তখন আমাদের দেশের জেলে অপরাধীরা চোর হয়ে ঢুকে, ডাকাত হয় বের হয়। যে অপরাধ করলো সে অসুস্থ। কিন্তু তাকে আমরা চিকিৎসা না দিয়ে শাস্তি দেই। এতে করে অপরাধ প্রবণতা কমে না। তাই এই বিষয় নিয়ে আমাদের আরো ভাবা উচিত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ্ সিম্পোজিয়ামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করায় দিনাজপুর জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁইয়াকে ধন্যবান জানান।
এছাড়া ফেনী ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আয়াতুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক তাইবুল হক ও রেজিস্ট্রার এএসএম আবুল খায়ের, ফেনী বারের আইনজীবী মিজানুর রহমান সেলিম।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮
এসএইচডি/এনটি