তারপর ১১ ডিসেম্বর থেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় নামবেন প্রার্থীরা। প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে এখন শেষ প্রহর গুনছেন তা স্পষ্টতই বলা যায়।
মূলত নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পরেই রাজশাহীরজুড়ে মাইকের ঝাঁঝালো প্রচারণা শুরু হবে। ৯৭ দশমিক ১৮ বর্গ কিলোমিটারের মহানগরের পাড়া-মহল্লার মোড়ে-মোড়ে কেবলই চলবে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের সরব প্রচারণা। ‘মা বোনদের বলে যাই ... মার্কায় ভোট চাই’, ‘মায়ের কোলে শিশুর ডাক...ভাই জিতে যাক’, ‘উড়ছে পাখি দিচ্ছে ডাক ... ভাই জিতে যাক’, ‘মাগো তোমার একটি ভোটে... ভাই যাবে জিতে’, ‘পদ্মানদীর দুই কূল ... জিতে যাবে...’, ‘... ভাইয়ের দুই নয়ন, রাজশাহীবাসীর উন্নয়ন’ ইত্যাদি স্লোগান আর কোরাসে মুখরিত হয় উঠবে গোটা মহানগর।
ফলে জোর প্রস্তুতি চলছে মাইকের দোকানে। পুরনো মাইক সার্ভিসিং করে সচল করা হচ্ছে। রঙ চড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নতুন রূপ। ঘষামাজা চলছে নতুন মাইকগুলোরও। এই মাইকগুলোর প্রতিটি ভাড়া হবে ক্ষেত্রবিশেষে এক-দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত।
সাধারণত কালেভদ্রে শোক সংবাদ প্রচার ও সভা-সমাবেশ ছাড়া মাইকের তেমন কদর থাকে না। ভাড়াও হয় কম। সবচেয়ে বেশি মাইকের ব্যবহার করা হয় নির্বাচনী প্রচারণাতেই। অন্য সময়ে দোকানগুলোতে কেবল মাইক সাজিয়ে রাখা হয় গুদাম ঘরে। সংসদ নির্বাচনে উপলক্ষে গুদামে সাজিয়ে রাখা সেই মাইকগুলো এখন বের করে সার্ভিসিং করা হচ্ছে। মাইকের ভেতর কোনো সমস্যা আছে কিনা তা দেখে নিচ্ছেন বিক্রেতারা।
রাজশাহীর কল্পনা হলের মোড়ের বাংলাদেশ মাইক সার্ভিসের কর্মচারী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এরই মধ্যে তার দোকানের মাইকগুলো বুকিং হয়ে গেছে। ১১ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার কোনো মাইক নেই। আর মাইক সার্ভিসিঙের জন্যও কোনো অবসর নেই। এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। এ সময় তাদের ব্যবসা জমজমাট হয়ে ওঠে বলেও জানান এই বাংলাদেশ মাইক সার্ভিসের এই কর্মচারী।
মহানগরীর নিউমাকের্ট এলাকার ঝঙ্কার মাইক সার্ভিসের স্বত্ত্বাধিকারি আলমগীর হোসেন বলেন, সারা বছর প্রায় অলস সময় পার করতে হয় তাদের। তবে নির্বাচন এলে মাইকের কদর বেড়ে যায়। এ কারণে নির্বাচনের আগে দোকানের মাইকগুলো ঠিকঠাক করে রাখতে হয়। নির্বাচনী ব্যবসা ধরতে মাইকগুলো তাই প্রস্তুত করে রাখছেন। তার প্রত্যাশা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার মাইকের ভালো ব্যবসা হবে। গত নির্বাচনে রাজশাহীর চারটি আসনে নির্বাচনই হয়নি। ফলে মাইকের তেমন প্রয়োজন পড়েনি। তবে এবার সব আসনে উৎসবমুখর পরিবেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই প্রচারণার কাজে মাইকের চাহিদাও বেশি থাকবে বলে জানান ওই বিক্রেতা।
খোকন সাউন্ড সিস্টেমের স্বত্ত্বাধিকারি খোকন শেখ বলেন, মিছিল, সভা-সমাবেশের এই প্রচারের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে ‘মাইক’। তাই মাইক সার্ভিসের পেশাদার দোকানিরা এবার জোরালো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। বছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোটামুটি ব্যস্ত সময় কাটাতে হয় এই পেশার মানুষদের। বাকি সময় অনেকটা নিরুত্তাপ থাকে মাইকপাড়া। এর ওপর এবার নির্বাচন। তাই নির্বাচন উপলক্ষে অন্য বছরের তুলনায় এবারের মৌসুমে ভালো সময় কাটবে বলেই আশা করা হচ্ছে বলেও জানান মহানগরীর এই মাইকবিক্রেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৮
এসএস/এএটি