দিনটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার আনিস-উজ-জামান বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৭১ সালের ৯ মে হানাদার বাহিনী ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ চালায় গজারিয়া উপজেলার ১০ গ্রামে।
জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ শহর সংলগ্ন রতনপুর গ্রামে ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর চুড়ান্ত যুদ্ধ হয়। পাক সেনাদের তিনটি বড় দলের সঙ্গে সহস্রাধিক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নেয়। সেদিন ধলেশ্বরী নদীতে থাকা গানবোট থেকে মর্টার সেলিং করছিল পাকসেনারা। মিত্র বাহিনীর বিমান বহর এসে পড়লে পাকসেনারা পিছু হটে। পরে মিত্র বাহিনীর আক্রমণে পাক সেনাদের গানবোট বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৪-১৫ জন স্থানীয় নিরীহ মানুষ মারা যায়। এ যুদ্ধে ৩ পাকসেনার মরদেহ পাওয়া যায়।
এরপর ১০ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে ঘন অন্ধাকার আর প্রচণ্ড শীতে হরগঙ্গা কলেজের সুরক্ষিত দূর্গ থেকে হানাদার বাহিনী মুন্সিগঞ্জ থেকে পালিয়ে যায়। হরগঙ্গা কলেজে ছিল হানাদার বাহিনীর প্রধান ক্যাম্প। কলেজের পূর্ব পাশের বধ্যভূমিতে নির্মাণ হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ। নির্যাতন-হত্যা ছাড়াও অসংখ্য নারী সম্ভ্রম হারায় এখানে। ক্যাম্পে বসেই নীলনক্সা করে ক্যাপ্টেন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে হানাদার বাহিনী।
২৯ মার্চ মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজের শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার সামনে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়। হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ জি এম এ মান্নান পতাকা উত্তোলন করেন এবং হাজার হাজার ছাত্রজনতার সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন।
১১ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিসেনাদের জয় বাংলা স্লোগানে আর বিজয় মিছিলে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে চারদিক। পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি বিধৌত মুন্সীগঞ্জ জেলাটি শত্রু মুক্ত হয়। জেলার সর্বত্র আনন্দ-উল্লাসের পাশাপাশি শুরু হয় হারানো স্বজনদের খোঁজার পালা। কেউ জীবিত পেয়েছেন স্বজনদের আবার কেউ চিরতরে হারিয়েছেন আপনজনদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৮
এনটি