ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অপশক্তিকে রুখে উজ্জ্বীবিত রায়েরবাজার বধ্যভূমি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮
অপশক্তিকে রুখে উজ্জ্বীবিত রায়েরবাজার বধ্যভূমি রায়েরবাজার বধ্যভূমি-ছবি-শাকিল আহমেদ

ঢাকা: রায়েরবাজার বধ্যভূমি। এখানে প্রতিদিনই মানুষ আসে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি। তবে শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোরের আলো ফোটার পর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে যাদের চেতনায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, যারা স্বাধীনতার স্বপক্ষে দেশের বুদ্ধিজীবীদের নিজের বোধ জাগানিয়ার কাজে ব্যবহার করে, তাদের পদভারে একটু বেশিই মুখরিত।

সকাল থেকে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে নিহত শহীদ সাংবাদিক-লেখক-শিক্ষক-আইনজীবী-ডাক্তারসহ দেশের বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করতে সাধারণ মানুষ ছুটে আসছেন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে। মঞ্চের এক পাশে শ্রদ্ধার গান, লাল সবুজ পোশাকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কথা, আর কন্ঠে স্বোপার্জিত বাংলাদেশের কবিতায় স্মরণ চলছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের।

কথা হয় মোহাম্মদপুর প্রিপেরাটররি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়েশা আফরিনের সঙ্গে। লাল সবুজ পোশাকে সে এসেছিল বাবার হাত ধরে।

আফরিন বলে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামসরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বেছে বেছে হত্যা করে। বিজয়ের মাত্র দুইদিন আগে এই দিনে দেশকে মেধাশূন্য করার পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে ঘর থেকে তুলে নিয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় জাতির দেশের বরেণ্য কৃতী সন্তানদের। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই আজ এখানে আসা।

তবে দেশকে মেধাশূন্য করেও যে খুব একটা ফল হয়েছিলো, তা নয়। এমনটাই বলছিলেন রাজধানীর আলী হোসেন বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা মাওলা সামিরা। তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেও কিন্তু বাংলাদেশকে রুখতে পারেনি পাকিস্তানি হানাদারেরা। বরং বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং এখন অনেক এগিয়ে আমরা। আশা রাখি এ ধারা আমরা অব্যাহত রাখতে পারবো।

দেশকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিতে পরিচালিত করার কথা বললেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার আলীম চৌধুরীর কন্যা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নুজহাত চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা আর কোনদিন রাষ্ট্রীয় কোনো পদে যুদ্ধাপরাধীদের দেখতে চাই না। সামনে নির্বাচন, আমরা আশা করি দেশবাসী যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানদের চিনে প্রত্যাখ্যান করবে। আমাদের অবশ্যই রক্তের ঋণের মূল্য রাখতে হবে।

শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছোট ছেলে তৌহিদ রেজা নূর বলেন, বর্তমান প্রজন্মের তরুণরা বিশেষ করে যারা নতুন ভোটার হচ্ছেন তারা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বোধে তাড়িত হয়ে ভোট দেন।  মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির যেন জয় হয়, তরুণ প্রজন্ম নিজেদের দেশপ্রেম থেকে সেদিকে নজর রাখবে, এমনটাই আশা করি।

বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, অপশক্তিকে রোধ করা, প্রতিহত করা এবং বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিণতের যে ধারাবাহিকতা, তা বজায় রেখে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদের তরুণ প্রজন্মকেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮
এইচএমএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।