বিজয়ের দলিলে সই করেছিল ইতিহাসের এ দিনেই। তাইতো দিনটিজুড়েই চলছে উৎসবের ঘনঘটা।
শহরের সব সরকারি ও আধাসরকারিসহ বেসরকারি স্থাপনায় এখন দ্যুতি ছড়াচ্ছে বিজয়ের লাল-সবুজ রঙ। তাতে এবার যোগ হয়েছে স্বর্ণালি আলো৷ বর্ণিল এ চাকচিক্য যে কারোই চোখে পড়ার মতো। জোনাকির মত ছোট্ট-ছোট্ট বাতিগুলো জ্বলছে আর নিভছে। কোথাও কোথাও জ্বলে থাকছে নিরবেই। পথে পথে উড়ছে সারি সারি বিজয় কেতন। এ যেনো অন্য এক নগর, ভিন্ন এক উৎসব।
রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানের মধ্যে আলোর সুপ্ত ধারায় মেতেছে নগর ভবনও। ভবনের প্রতিটি দেয়ালেই এখন লাল-সবুজ আর স্বর্ণালী রঙের ছাপ। শুধু লাল-সবুজই নয়, উৎসবের আলোয় যোগ হয়েছে সাদা ও নীল রঙয়ের বাতিও।
সন্ধ্যায় মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে লাইটিং দেখছিলেন আরাফাত রহমান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘নগর ভবন এলাকায় ফ্রি ওয়াই-ফাই থাকায় প্রতিদিন এখানেই আড্ডা দিকে আসেন তার মত অনেক তরুণ। কিন্তু আজ অন্যরকম লাগছে। তাই দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। কয়েকটা সেলফিও নিয়েছেন। বাড়িয়ে গিয়ে অন্যদের দেখাবেন’।
শহরজুড়ে এমন অসংখ্য মানুষ সন্ধ্যার পর বেরিয়ে পড়েছেন বিজয়ের রঙিন আলোয় নিজেকে ভাসিয়ে নির্মল আনন্দ উপভোগের জন্য।
বিজয় দিবসকে ঘিরে এখন উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেছেন নগরবাসী। কেবল শহরেরই নয়, গ্রাম থেকেও পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঝলমলে রাজশাহী দেখার জন্য অনেকেই এসেছেন।
রাজশাহীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বরে বেড়াতে আসা তরুণ নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। যুদ্ধ না দেখলেও যুদ্ধের গল্প শুনেছি। পরাধীনতার হাত থেকে মুক্তির যে, কী স্বাদ এ আনন্দ-উৎসবের মধ্যেই তার অনুভূতি মিলছে। যে কারণে তানোর থেকে শহর ঘুরতে এসেছি’।
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পূর্তিতে বিজয়ের আলোয় নিজেদের ভাসিয়ে বাঙালির শৃঙ্খলমুক্ত হওয়ার দিনটি এভাবেই প্রাণভরে উদযাপন করছেন সবাই। গৌরব আর অহংকারের এ দিনে বিজয়ের আলোয় তাই আলোকিত হয়ে ওঠেছে রাতের রাজশাহী। নগরীজুড়ে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা করা হয়েছে। শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় আলোকসজ্জিত করা হয়েছে। বর্ণিল সাজে সেজেছে প্রধান সড়কের মোহনাগুলোও।
এরই মধ্যে রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত। তবে পৌষের কনকনে শীত উপক্ষো করেই মোটরসাইকেল, রিকশা ও ব্যাটারিচালিক অটোরিকশায় করে ঘুরে ঘুরে রঙিন আলোকসজ্জা দেখে বেড়াচ্ছেন। এ যেনো অন্যরকম পুলক।
রাজশাহী শহর ঘুরে দেখা গেছে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চারিদিকেই যেন লাল-সবুজের আলোর বন্যা বইছে। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর ও নগর ভবন ছাড়াও রেলভবন, রেলওয়ে স্টেশন, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের ভবন, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ, বিদ্যুৎ ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভবনে আলোকসজ্জা শোভা পাচ্ছে। মোহনীয় সাজে সেজেছে রাতের নগরী।
বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
এসএস/ওএইচ/