রোববার (১৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামের সরদার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
মাইনুদ্দিন সরদার বাড়ির মিয়াজী সরদারের ছেলে। তিনি চট্টগ্রামের একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ করছিলেন।
মাইনুদ্দিনের মা ফিরোজা বেগম বাংলানিউজকে জানান, কয়েকদিন আগে তার পুত্রবধূ ফাতেমার কানের দুল হারিয়ে যায়। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ দেখা দেয়। এরপর মাইনুদ্দিন চট্টগ্রামে তার কর্মস্থলে চলে যান। তখন ফাতেমার বাবা এসে তাকে নিজের বাড়ি মতলব দক্ষিণ উপজেলার করবন্দ গ্রামে নিয়ে যান। স্ত্রী কেন শ্বশুর বাড়িতে চলে গেছে, এ নিয়েও দু’জনের সঙ্গে ফোনে কথা কাটাকাটি হয়।
মাইনুদ্দিনের বড় ভাই কালাম সরদার জানান, এই কলহের জেরে শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে চলে আসেন মাইনুদ্দিন। এরপর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে আসেন। সেখানেও দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
আর সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) ভোর ৪টার দিকে মাইনুদ্দিনের আরেক বড় ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী জসিম উদ্দিন মোবাইল ফোনে মা ফিরোজা বেগমকে ফোন দেন। তিনি মাকে জানান, মাঈনুদ্দিন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মারা যাবেন জানিয়ে নিজের, স্ত্রী ও সন্তানদের ভিডিও করে পোস্ট করেছেন রাতে। সেজন্য মাইনুদ্দিনের ঘরে গিয়ে তাদের দেখে আসার জন্যও মাকে বলেন জসিম।
তখন ফিরোজা বেগম ও কালাম সরদার ওই ঘরে গিয়ে দরজা খুলে প্রথমে দুই শিশুকে লেপের নিচে মৃত পড়ে থাকতে দেখেন। মাইনুদ্দিনকে দেখেন ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায়। তখন তারা চিৎকার করতে থাকলে বাড়ির লোকজন ছুটে আসে। খোঁজাখুঁজি করে বাড়ির পুকুরে খুঁটির মধ্যে বাঁধা অবস্থা ফাতেমার মরদেহ পাওয়া যায়।
এলাকাবাসী ধারণা করছেন, ফাতেমাকে বিষ খাইয়ে এবং দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে মেরে আত্মহত্যা করেন মাইনুদ্দিন।
খবরটি শুনেই চাঁদপুরে পুলিশ সুপার (এসপি) জিহাদুল কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, মরদেহগুলোর সুরতহাল করা হয়েছে এবং উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ মুহূর্তে হত্যার কারণ বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮/আপডেট ১০৫৫ ঘণ্টা
আরএ/এইচএ/