বুধবার (৯ জানুয়ারি) ভোরে মণিরামপুরের নেহালপুর সড়কের কামালপুর জোড়া ব্রিজের কাছে এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।
বিল্লাল উপজেলার খেদায়পুর গ্রামের মোস্তফার ওরফে ঝটুর ছেলে।
তারিফের স্বজনরা জানান, রোববার (৬ জানয়ারি) বিকেলে খেলতে বাড়ি থেকে বের হয় তারিফ। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন আশপাশের এলাকা ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু করে তারিফকে। কিন্তু না পেয়ে পরদিন সোমবার (৭ জানুয়ারি) মণিরামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তারা।
তারিফের চাচা শরিফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) ভোরে আমাদের বাড়ির আঙিনা থেকে একটি চিরকুট কুড়িয়ে পান প্রতিবেশীরা। ওই চিরকুটের ওপরের অংশে লেখা দেখা যায়- ‘তারিফ আমার কাছেই আছে, নিচের অংশে একটি মোবাইল নম্বর’। প্রতিবেশী এক নারী ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তারিফকে ফেরত নিতে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী। এরপর বিকেলে বিষয়টি স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামকে জানালে তিনিও ওই নম্বরে কথা বলেন। তার কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। আমরা ওই টাকা দিতে রাজি হলে একটি বিকাশ নম্বর দেয় অপহরণকারী।
একপর্যায়ে কৌশলে ওই বিকাশ এজেন্টের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দোকানটি কেশবপুর থানার সামনে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। এরপর মুক্তিপণের টাকা নিতে এলে পুলিশের সহযোগিতায় অপহরণকারী (প্রতিবেশী তরুণ) বিল্লালকে আটক করা হয়।
মণিরামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তারিফ নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তার পরিবার। পরে এ ঘটনায় তারিফের প্রতিবেশী বিল্লাল হোসেনকে আটক করে পুলিশ। বিল্লাল শিশুটির পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। মঙ্গলবার দুপুরে কেশবপুরের একটি বিকাশের দোকানে মুক্তিপণের টাকা আনতে গেলেই পুলিশ তাকে আটক করে।
এরপর মঙ্গলবার গভীর রাতে বিল্লালের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে সঙ্গে নিয়ে নিখোঁজ তারিফকে উদ্ধারে খেদাইপুর গ্রামে অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। পথে সাতনল বাজার সংলগ্ন ব্রিজের কাছে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা বিল্লালের সহযোগীরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। সেসময় ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হলে বিল্লাল নিহত হয়।
ভোর ৫টার দিকে ফেদাইপুর গ্রামের একটি কালভার্টের নিচ থেকে শিশু তারিফের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারিফের জমজ ভাই আছে একজন, নাম আরিফ। তাদের বড়বোন পাশ্ববর্তী সাতগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের পরিবারের সঙ্গে বিল্লালের মা-বাবার মাঝে-মধ্যে কথা কাটাকাটি হতো। কয়েকমাস আগেও বিল্লালের মা তাদের হুমকি দিয়ে বলেছিলো- বড় ক্ষতি করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৯
ইউজি/ওএইচ/এইচএ/