চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল। অনেকগুলো চা বাগান ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এখানে।
এমন একটি মাতৃতান্ত্রিক হতদরিদ্র পরিবাবের নাম আলোমনিদের সংসার। পারিবারিক বন্ধন যেখানে মায়া-মমতায় জড়াজড়ি করে। বড় ভালোবাসা দিয়ে ছেলেমেয়েদের আগলে রেখেছেন স্বামীহীন আলোমনি তাঁতি।
পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) চা বাগানগুলোতে চলছে ছুটি। নারী চা শ্রমিক আলোমনি তাঁতি। তিনি কাজ করেন এমআর খান চা বাগানে। চার মেয়ে এক ছেলে তার। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে এবং ছোট ছেলেটি স্কুলে পড়ে। গত ছয়মাস আগে তার স্বামী বিকাশ তাঁতি অসুস্থ হয়ে মারা যান। তারপর তার সংসারে নেমে আসে সীমাহীন দরিদ্রতা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় ভাড়াউড়া চা বাগানের শ্রমিক লাইনে গিয়ে দেখা গেলো সন্তানদের মুখে পৌষসংক্রান্তির পিঠা তুলে দিতে মাটির চুলাতে পিঠা তৈরি করছেন আলোমনি। ঘন ধোঁয়ায় ঝাপসা হয়ে উঠেছে তার মুখ। মেয়েরা পাশে বসে মায়ের সঙ্গে গল্প-গুজবও করছেন।
তখন বাংলানিউজকে আলোমনি আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, শুনেছি সরকার না-কি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা চালু করেছে। কিন্তু আমিতো কিছুই পাইনি। খুব অসহায় আমি। চা বাগানে কাজ করে মাত্র ১১০ টাকা মজুরি পাই দিনে। এর মধ্যে এক হাজার টাকা ঘর ভাড়াই দিতে হয় মাসে। তাছাড়া কোনো মতে চলছে সংসার।
আলোমনির মেয়ে পলি তাঁতি বাংলানিউজকে বলেন, মা সকালে উঠেই আমাদের ভাই-বোনদের জন্য পিঠা তৈরি করে করতে বসে গেছে। এর মধ্যে তেলের পিঠা, সেদ্ধ পিঠাসহ অনেকগুলো পিঠা মা একাই বানিয়ে ফেলেছে।
শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মানিক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার জন্য কেউ আমাদের কাছে আবেদন করলে, আমরা সেটি যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিই।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
বিবিবি/টিএ