বন্ধ কারখানাগুলোর ফটকে সকালে অল্প সংখ্যক শ্রমিক ভিড় করলেও তাদের সরিয়ে দেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে শ্রমিকদের উদ্দেশে বাড়িতে অবস্থান করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
আশুলিয়ার কয়েকটি কারখানার ফটকে বন্ধের নোটিশ দেখা যায়। তবে এ আর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেডের নোটিশ বোর্ডে ১৫৪ জন শ্রমিকের নাম, ছবিসহ কয়েকটি তালিকা দেখা গেছে। এই শ্রমিকদের সাময়িক বরখাস্ত করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে আশুলিয়া ও সাভারে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় ৮টি কারখানা কর্তৃপক্ষ ১২৯৯ জনের বিরুদ্ধে কারখানা ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে পৃথক মামলা করেছেন। সাভার ও আশুলিয়া মিলে ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আশুলিয়া থানা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, আশুলিয়া থানাধীন ৬টি পোশাক কারখানা কৃর্তপক্ষ ১৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৬৮৫ অজ্ঞাতনামাসহ মোট ৮৮১ জনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করেছে। এ থানায় মোট আটক রয়েছে ১২ জন।
নীট এশিয়া লিমিটেডের প্রধান ব্যবস্থাপক অর্থ ও হিসাব মো. আনোয়ারুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ১১ জানুয়ারি কারখানা ভাঙচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে আশুলিয়া থানায় ৫০ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।
অরবিট এ্যাপারেলস লিমিটেডের পক্ষ থেকে মো. শফিকুল ইসলাম গত ১১ জানুয়ারি বাদী হয়ে বেআইনিভাবে কারখানায় প্রবেশ করে ভাঙচুর, চুরির অভিযোগে আশুলিয়া থানায় ৪০/৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং মিলস লিমিটেড ফ্যাক্টরি-২ এর নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বাদী হয়ে গত ০৯ জানুয়ারি আশুলিয়া থানায় ভাঙচুর ও চুরির করে ২৮/২৯ লাখ টাকার ক্ষতির অভিযোগে ৫৫ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২০০/৩০০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ.আর জিন্স প্রোডিউসার লিমিটেড-এর এইচ আর এডমিন মো. শাহ আজিজ গত ১১ জানুয়ারি বাদী হয়ে মারপিট, ভাঙচুর ও মেশিনারিজ চুরির অভিযোগে ৬২ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে ও ২০০/২৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
মাহমুদ ফ্যাশন লিমিটেড-এর সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. শাহ-আলম গত ১১ জানুয়ারি বাদী হয়ে বিভিন্ন অভিযোগে ২৯ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে ও ২০/২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
হামিম গ্রুপ (গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি) সিকিউরিটি গার্ড মো. জাহাঙ্গীর আলম গত ১২ জানুয়ারি বাদী হয়ে ২ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগ এনে ৫০/৬০ জন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
আশুলিয়া থানার (ওসি) রিজাউল হক বাংলানিউজকে বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬টি মামলা হয়েছে। এতে ১০-১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা চলছে।
এদিকে সাভার থানা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাভার থানাধীন দুইটি পোশাক কারাখানা কৃর্তপক্ষ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৪০০ জন অজ্ঞাত নামাসহ মোট ৪১৮ জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন।
দু’টি মামলায় মোট ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাভার থানা পুলিশ।
উল্লেখ্য, টানা আন্দোলনের পর গত দুই দিন ধরে সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে কাজে যোগ দিয়েছে শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
আরএ