এরই মধ্যে সাংবাদিক পরিচয় শুনে চায়ের কাপ বাড়িয়ে দিলেন দিন মজুর নুরুন্নবী। কুয়াশা ঘেরা শীতের রাতে চায়ের উষ্ণতা আর গাল গল্পে মেতে ওঠে মধ্যরাতে গ্রামীণ এই আড্ডা।
শীত মোকাবেলায় প্রস্ততি সম্পর্কে এই গ্রামের রিকশাচালক মাইদুল মিয়া বললেন, দুই বছর আগে একটা ছুইটার কিনচিলাম তাকে গায়োত দিয়ে কোন রকম চলতিচে। নয়া কাপড় চোপড় কিনি কি দিয়া। হাতের উপুর দিয়্যা সংসার। প্যাটোত দিলে গায়োত হয় না, গায়োত দিলে প্যাটোত হয়না। কোন রকম কষ্ট করি জারটা পার করল্যাম।
আড্ডা থেকে মধু মিয়া খড়ের আগুন বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, শুনি তামানবাড়ি বলে সগলে কম্বল দেয়। হামার ইতি অ্যালাও ক্যাও আসে নাই বাবা।
গল্প তখন বেশ জমে উঠেছে। চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিতে দিতে আড্ডার এক সদস্য বললেন, এলাকার গরীব মানুষ গুল্যার খালি কষ্ট। ছোলপোল আর বুড়া গুলের দূর্ভোগের শ্যাষ নাই। শীতে সরকারী বেসরকারীভাবে কতজন বলে কম্বল পায় হামার এদিক কেউ খোঁজ নেয় না। চেয়ারম্যান মেম্বাররা খালি কয় কম্বল শ্যাষ হয়্যা গেছে পরের বছর দেমো।
শীতবস্ত্রের বরাদ্দের ব্যাপারে রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলানিউজকে জানান, শীতের সময় যে কম্বল বরাদ্দ পাওয়া যায় তার চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি। তাই পুরো ইউনিয়নে সব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব হয় না। তারপরেও যথাসাথ্য চেষ্টা করছি অসহায় শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।
জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, ইতিমধ্যে জেলায় অসহায়, গরীব ও শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রায় চল্লিশ হাজার কম্বল বিতরন করা হয়েছে। আরও কিছু কম্বল আমাদের হাতে রয়েছে, সেগুলো জেলার যে সব জায়গায় এখন পযর্ন্ত শীতবস্ত্র পৌঁছায়নি সেইসব এলাকায় সঠিক তালিকা করে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারিভাবে শীতার্ত মানুষের বস্ত্রের চাহিদা শতভাগ পুরন করা সম্ভব নয় তাই বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাসহ সমাজের বিত্তবান মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০০ ঘন্টা, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯
এমএমএস