রোববার (২০ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় রাজধানীর ধানমন্ডির (রোড নং-৬/এ) ঈদগাহ মসজিদের সামনে থেকে ডিবি দক্ষিণ বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিম তাকে গ্রেফতার করে।
রিজওয়ান বাংলাদেশের কালো তালিকাভুক্ত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুসলিমিনের প্রত্যক্ষ মদদ দাতা এবং বিতর্কিত লেকহেড গ্রামার স্কুলের সাবেক মালিক।
ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রিজওয়ান।
ডিবির (দক্ষিণ) সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুর রহমান জানান, রিজওয়ানসহ জামাতুল মুসলিমিনের অন্যরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাসা, মসজিদ এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন হারুন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিজস্ব অফিসে দাওয়াতের কাজ পরিচালনা করতেন।
তিনি বলেন, এই সংগঠনের সদস্যরা জঙ্গি কার্যক্রম দ্রুত বিস্তারের জন্য বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তারই কার্যক্রম হিসেবে রিজওয়ান ২০০৬ সালে লেকহেড গ্রামার স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা লতিফ আহম্মেদের কাছ থেকে কিনে নেন। পরবর্তী সময়ে তিনি এখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মস্তিস্কে ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠীর কার্যকলাপ সম্পর্কে জিহাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। এই স্কুলটি আসামি রিজওয়ান জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করতেন।
এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবগত হলে রিজওয়ান কৌশলে ২০১৭ সালে অপর আসামি খালেদ হাসান মতিনের কাছে লেকহেড গ্রামার স্কুলটির স্বত্ব বিক্রি করে আত্মগোপনে চলে যান।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে জামাতুল মুসলিমিনের কার্যক্রম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে এলে সংগঠনটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।
রেজওয়ান ব্রিটেনে থাকা অবস্থায় জামায়াতুল মুসলেমিন নেতা আবু ইসা আল রাফাই (জর্ডান থেকে ব্রিটেনে বসবাসকারী) এর মাধ্যমে সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত হন। ২০০২ সাল থেকে বাংলাদেশে তিনি জামায়াতুল মুসলিমিন সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন।
ডিবি জানায়, জামাতুল মুসলিমিন প্রথমে দেশের ১৩ জেলায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৫ সালে কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তারা আরসিইউডি (রিসার্স সেন্টার ফর ইউনিটি ডেভেলপমেন্ট) ছদ্মবেশে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে।
সর্বশেষ জামায়াতুল মুসলিমিনের আমির ছিলেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রেজাউর রাজ্জাক। গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার পর ড. রেজাউর রাজ্জাক মালয়েশিয়া পালিয়ে যান।
এদিকে, ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে রেজওয়ানকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই চিঠির আলোকে ৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে উপ-সচিব হাবিব মো. হালিমুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ সদর দফতর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৯
পিএম/আরবি/