ইজিবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা রক্ষার লক্ষ্যে সোমবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় নগর ভবনে একজন ইজিবাইক চালকের হাতে ফরম তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। যা চলবে আগামী ১৫ দিন।
প্রতি ফরমের মূল্য ৫শ’ টাকা। চার বছর পর শহরে ইজিবাইক চলাচলের লাইসেন্স দেওয়া শুরু হলো।
কেসিসির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ইজিবাইক মালিক ও চালকরা। এতে শহরের সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসছে বলে মনে করছেন শহরবাসী। তবে শহরের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার ক্ষেত্রে মালিকদের ব্যাপারে কড়াকড়ি করলেও চালকদের ব্যাপারে নিয়মটা শিথিল করার দাবি জানান চালকরা।
ইজিবাইক লাইসেন্সের আবেদন ফরম মূল্য ৫শ’ টাকা ও ইজিবাইক লাইসেন্সের মূল্য ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এটা একজন চালকের জন্য বেশি বলে মনে করছেন অনেক চালক।
কেসিসির সিনিয়র লাইসেন্স অফিসার এস কে এম তাছাদুজ্জামান বলেন, অফিস চলাকালীন সময় নগর ভবন থেকে এ ফরম সংগ্রহ করা যাচ্ছে। ইজিবাইক লাইসেন্স ফরম নিতে গেলে চালক বা মালিককে শহরের স্থায়ী বাসিন্দার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ইজিবাইকের মালিকানার কাগজপত্রসহ আরও কিছু আনুষঙ্গিক কাগজপত্র লাগছে। এসব কাগজপত্র গেজেটেড অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত করে ফরমের সঙ্গে সংযুক্ত সাপেক্ষে জমা দিতে হচ্ছে।
তিনি জানান, ইজিবাইক মালিক ও চালকদের বিষয়টি অবগত করতে এ ব্যাপারে সোমবার থেকে শহরে কেসিসির পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। ১০ হাজার ফরম বিক্রির টার্গেট নেওয়া হয়েছে। ফরম বিক্রি শেষে তা যাচাই-বাছাই করে মেয়র প্রকৃত মালিক ও চালকদের মধ্যে ইজিবাইক চলাচলের অনুমতিপত্র দেবেন।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারির পর থেকে খুলনা শহরে ইজিবাইক ঢোকা ও বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। এজন্য শহরে আটটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। যার কাজ এখনও চলছে। যানজট নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।
২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে শহরের সড়কগুলোতে ব্যাটারিচালিত এ যানটি চলাচল শুরু করে। যানটি দ্রুত শহরে ছড়িয়ে পড়ায় যানজট বেড়ে যায়। গাড়ি চালানোয় চালকদের ন্যূনতম দক্ষতা না থাকায় এবং নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচলের কারণে পথচারী ও যাত্রীদের প্রায়ই দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয়। বিদ্যুতের সাহায্যে ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ করার কারণে শহরে লোডশেডিংয়ের মাত্রাও বেড়ে গিয়েছিল। এ কারণেই বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও পথচারীরা শহরে ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি জানিয়ে আসছিল।
২০১৬ সালের ১১ মে খুলনার তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর নগর ভবনে সাবেক সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্থানীয় দুই সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কেএমপির শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আলোর মুখ দেখছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
এমআরএম/আরবি/