মাগুরা সদর উপজেলার হাজিপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক সাহিদুল ইসলাম ও তার পরিবারকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারায় অত্যাচার, নির্যাতন চালাচ্ছেন নিজ ভাই, ভাতিজাসহ সহযোগীরা।
সবশেষ গত রোববার (২০ জানুয়ারি) বাড়িতে এসে হামলার ঘটনায় আহত মা ও দুই মেয়েসহ তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কৃষক সাইদুল ইসলাম জানান, নিজের সামান্য জমিতে কৃষি কাজের উপর নির্ভর করে দুই মেয়েসহ ৪ সন্তানের লেখাপড়া ও যাবতীয় খরচ বহন করে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টের মধ্যে দিন পার হয় তার। সম্বল বলতে সামান্য কৃষি জমি আর বসতভিটার জমিটুকুই।
এ অবস্থায় এই সম্বলটুকুও নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারই ভাই ভাতিজাসহ অন্যরা। এ উদ্দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে অত্যাচার, নির্যাতন চালিয়ে আসছেন তারা। প্রকাশ্যেই বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার জন্য হুমকি, ধামকিসহ কটূক্তিমূলক বিভিন্ন কথাবার্তা বলে প্রায়ই তাদের ভয় দেখানো হয়। সবশেষ গত বোববার দুপুরে সামান্য কারণে বাড়ির উপর এসে তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেছে চাচাতো ভাই মঞ্জুরসহ তার বখাটে ছেলে রিফাত।
এ সময় প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাদপাতালে ভর্তি করেন, হামলার শিকারে ছোট মেয়ে হাজিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী সুবর্নার অবস্থা অশঙ্কাজনক। স্ত্রী কুলসুম বেগম ও বড় মেয়ে মাগুরা আদর্শ কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী সালমা এখনো অসুস্থ অবস্থায় সদর হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসাধীন।
এদিকে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করলেও এখনো তেমন কোন সুফল বা অগ্রগতি হয়নি। উল্টো প্রতিপক্ষের লোকের হুমকি ধামকির ভয়ে বাড়িও ফিরে যেতে পারছেন না তারা। পরে জেনেছেন থানায় এজাহার দিলেও মামলা রেকর্ড হয়নি।
আহত কুলসুম বেগম বলেন, আমাদের দেখার কেউ নেই। যে কারণে যার যা ইচ্ছে তাই করলেও কোন সুবিচার পাচ্ছি না। ছেলেরা ছোট, বড় দুই মেয়েকে নিয়ে সারাক্ষণ শঙ্কার মধ্যেই বসবাস করছি। জমিটুকু গ্রাস করার প্রয়াসে দেবর মঞ্জুর ও তার ছেলে রিফাত প্রায় সময় নানা অজুহাতে অত্যাচার, নির্যাতন করলেও প্রতিবাদ হয় না, কোন বিচারও পাই না। গ্রামের কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করে না বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাজিপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (উপপরিদর্শক) আমিরুজ্জামান জানান, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তাদের নিজেদের দুইপক্ষের মধ্যে মিমাংসার কথা বলা হয়েছে। আহতদের বিষয়ে হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে মিমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হলে পরে মামলায় যাওয়া যাবে। বিষয়টি তিনি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন বলেও জানান এসআই।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
জেডএস