ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বরাদ্দ কমছে রেল-বিমানে, বাড়ছে নৌ-পরিবহনে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
বরাদ্দ কমছে রেল-বিমানে, বাড়ছে নৌ-পরিবহনে ছবি: বিমান ও নৌযানের

ঢাকা: ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ কমছে রেলপথ এবং বেসামরিক বিমান ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ে। তবে বাড়ছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে। যদিও দেশের সার্বিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় চলতি এ অর্থবছরে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার নতুন মূল এডিপি অনুমোদন হয়েছিল।

সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

সূত্র বলছে, এ মাসের শেষ সপ্তাহে চূড়ান্ত হবে সংশোধিত এ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি)।

শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্মসূচিটি চূড়ান্ত করবেন।

এও জানা গেছে, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ৩৪ প্রকল্পের আওতায় মূল এডিপিতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয় ১১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। এখন সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ হচ্ছে সাত হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। ফলে রেলে বরাদ্দ কমছে তিন হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। অথচ মূল এডিপি থেকে প্রকল্প সংখ্যা বাড়ছে ১২টি।

মূলত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দুই মেগা প্রকল্পে খরচ কম হওয়ায় বরাদ্দ কমছে। এর মধ্যে একটি প্রকল্প হলো- ‘দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে গুনদুম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ’। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। যদিও প্রকল্প বাস্তবায়ন গতি কম।

আরেকটি মেগা প্রকল্প হলো- ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা থেকে পদ্মা বহুমুখী সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত নতুন ব্রডগেজ রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ’। যার দৈর্ঘ্য হবে ১৬৯ কিলোমিটার। লুপ সাইডিং (লাইন বদলের জন্য) এবং ডাবল লাইনসহ মোট ট্র্যাক হবে ২১৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার। এই প্রকল্পেরও অগ্রগতি কম।
 
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, সংশোধিত এডিপিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মোট বরাদ্দ কমছে তিন হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। মূলত দু’টি বড় প্রকল্পে চলতি অর্থবছরে খরচ কমছে বলেই বরাদ্দও নিচে নামছে এই মন্ত্রণালয়ে।

পরিকল্পনা বিভাগ জানিয়েছে, একইভাবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে মূল এডিপিতে নয় প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল এক হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। এখন সংশোধিত এডিপিতে পাঁচ প্রকল্পে বরাদ্দ হচ্ছে ৮৯৩ কোটি টাকা। ফলে এই মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ কমছে ৫৬৭ কোটি টাকা। যদিও প্রকল্পও চারটি কমছে।
 
এই মন্ত্রণালয়ে মাত্র একটি প্রকল্পের কারণে বরাদ্দ কমছে সংশোধিত এডিপিতে। প্রকল্পটি হলো ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিমানবন্দরের টার্মিনাল বাড়ানো।

এ প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বিমান পরিবহনের চাহিদা পূরণ ও আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ও সুবিধাদি নিশ্চিতকরণ করা হবে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের দুই হাজার ৩৯৫ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা ১১ হাজার ২১৪ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা। প্রকল্প সহায়তা সংস্থা জাইকা।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে এটাই মেগা প্রকল্প এডিপিতে। মূল এডিপিতে প্রকল্পে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু টেন্ডার না হওয়ায় এই টাকা খরচ হচ্ছে না। ফলে একটা প্রকল্পের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ে এডিপির টাকা খরচে তারতম্য হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়টির অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরের এডিপিতে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও টেন্ডার করতে পারিনি। ফলে সংশোধিত এডিপিতে টাকা কম হচ্ছে। তবে পরের বছরে আমরা বেশি করে খরচ করবো।

এদিকে, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে ৩৪ প্রকল্পের আওতায় মূল এডিপিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল দুই হাজার ৯০৫ কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে ১৫ প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ হচ্ছে তিন হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। যদিও প্রকল্পের সংখ্যা ১৯টি কমছে, তারপও বরাদ্দ বাড়ছে ৯৬৯ কোটি টাকা।

কেননা, এ মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি ভালো। সংখ্যা কমলেও খরচ বেশি হচ্ছে মন্ত্রণালয়টির আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোতে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
এমআইএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।