ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্থায়ী বাণিজ্যমেলার জন্য মিলছে না চাহিদামত জমি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯
স্থায়ী বাণিজ্যমেলার জন্য মিলছে না চাহিদামত জমি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণের কাজ চলছে। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানী ঢাকার পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণের অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (বিসিএফইসি) প্রকল্পের কাজ শুরু করতেই ১০ বছর পার হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। চীন সরকারের নিযুক্ত চীনা সরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।

প্রকল্পের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২০১৯ সালের মধ্যেই মেলার কাজ বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে।

তবে প্রয়োজনীয় জমি না পাওয়ায় নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে বেঁধে দেওয়া সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

চীন সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর সড়কে নির্মিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণ। বর্তমানে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী জমি বরাদ্দ না দেওয়ায় পার্কিং কাজেও সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। পার্কিংসহ প্রয়োজনীয় কাজ করতে রাজউক থেকে আরও ১২ একর জমি প্রয়োজন বলে মনে করে ইপিবি।

বিসিএফইসি প্রকল্পের পরিচালক রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক মানের বাণিজ্যমেলা করতে আরও জমি প্রয়োজন। কিন্তু রাজউক প্রয়োজন অনুযায়ী জমি দিচ্ছে না। ৬ দশমিক ১০ একর জমি গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য যথেষ্ট নয়, আরও জমি প্রয়োজন। বরাদ্দ দেওয়া ৬ দশমিক ১০ একর জায়গার মূল্য এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করাও সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, একটা আন্তর্জাতিক মানের মেলা প্রাঙ্গণ করতে আরও ১২ একর জমি জরুরি। এ বিষয়ে রাজউকে বার বার চিঠি দিয়েছি, কিন্তু জমি পাচ্ছি না।

ইপিবি সূত্র জানায়, এক্সিবিশন সেন্টারটিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার জন্য অনেক কিছু করণীয় আছে। কিন্তু রাজউক চাহিদা অনুযায়ী জমি বরাদ্দ না করায় সেসব কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মানের একটি এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণের জন্য ৩৫ একর জমি দরকার। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া গেছে ২৬ দশমিক ১০ একর। এছাড়া রাজউক বরাদ্দ করা ৬ দশমিক ১০ একর জায়গা শুধু গাড়ি পার্কিং কাজে ব্যবহার করার শর্তে প্রাথমিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা একটি উন্নতমানের মেলা প্রাঙ্গণ নির্মাণে সহায়ক নয়।

রাজউকের শর্ত অনুযায়ী বরাদ্দ করা নতুন ৬ দশমিক ১০ একর জায়গা গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ব্যবহার করতে হলে সেখানে মেলার প্রয়োজন অনুযায়ী অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। এ কারণে উক্ত শর্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।

প্রকল্পের আওতায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে আরও জমি প্রয়োজন। এই জমি না পাওয়া গেলে প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। প্রকল্পের জন্য আরও ১২ একর জমি বরাদ্দ করার জন্য পুনরায় রাজউকের কাছে চিঠি দিয়েছে ইপিবি। ১২ একর জমি নির্মাণাধীন মেলা প্রাঙ্গণের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত।

ইপিবি সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের আগস্টে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২০ একর জমির ওপর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (বিসিএফইসি) প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আরও ৬ দশমিক ১০ একর জমি শুধু গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই হিসেবে বর্তমানে প্রকল্পের মোট জমি ২৬ দশমিক ১০ একর। চীনের বেইজিং ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকচারাল ডিজাইনের (বিআইডি) নকশা অনুযায়ী, এ প্রদর্শনী কেন্দ্রে দেড় হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, প্রতিটি নয় বর্গমিটারের ৮০০টি বুথ, দু’টি বড় হলরুম, সম্মেলন কেন্দ্র, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র, সভাকক্ষ, প্রেস সেন্টার, সার্ভিস রুম ও সাবস্টেশন নির্মাণ করা হবে।

মোট ফ্লোর এরিয়া ৩৩ হাজার বর্গ মিটার, প্রতিটি স্টলের আকার ৯ দশমিক ৬৭ বর্গমিটার।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৯
এমআইএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।