ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনার ময়ূর নদীর অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯
খুলনার ময়ূর নদীর অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নদীর পাড়ের বসতবাড়িসহ সব ধরনের স্থাপনা/ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: খুলনার ময়ূর নদীসহ মহানগরের অভ্যন্তরীণ ২২ খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। 

মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে নগরীর অন্যতম প্রবেশদ্বার গল্লামারি ব্রিজের পশ্চিম পাশে ময়ূর নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।

অভিযানে নদীর দুই পাড়ের অবৈধ কাঁচা, সেমিপাকা, পাকা স্থাপনা ক্রেন ও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

 

অভিযানে নেতৃত্ব দেন খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো দেলোয়ার হোসেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খান মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।

খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে খুলনা সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ময়ূর নদীসহ মহানগরের অভ্যন্তরীণ ও পার্শ্ববর্তী খালগুলোর অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মহানগরীর ময়ূর নদীসহ ২২ খালের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনা, খুলনার সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা ও বসবাসের উপযোগী করার লক্ষ্যে সম্পূর্ণরূপে দখলমুক্ত করা হবে।  

এদিকে খুলনা জেলা প্রশাসন, খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি), পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও সেটেলমেন্ট অফিস যৌথভাবে দখলমুক্ত করার কাজ বাস্তবায়ন করছে। তিনটি পদক্ষেপের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে কাজগুলো সম্পন্ন হবে। উচ্ছেদ কার্যক্রম সফল করার জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট টেকনিক্যাল কমিটি ও ২৫ সদস্য বিশিষ্ট উদ্ধার কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (৪ জানুয়ারি) খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এসব খালের বর্তমান অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।  

জানা যায়, প্রভাবশালীরা স্রোতহীন ময়ূর নদীতে খুব সহজেই পাটা ও বাঁধ দিয়ে প্রতিদিনই দখল কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। পৈত্রিক সম্পত্তির মতো গাছপালা লাগানো ও চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা, এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও  পাকা বাড়ি-ঘর ভবন নির্মাণ করেছিলেনও অনেকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুই যুগ আগেও ময়ূর নদীতে পালতোলা নৌকা চলাচল করতো। অনেক জেলে পরিবারের জীবিকার মূল উপজীব্য ছিল এ নদী। গোসল ও তৈজসপত্র ধোয়ার কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতো। অথচ এখন দখল ও দূষণে আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ময়ূর নদীর সঙ্গে আগে রূপসা নদীর সরাসরি সংযোগ ছিল। দখলে নদী হারিয়েছে নিজস্বতা। ময়ূর নদীকে নাব্য করতে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন। তাতে পুরোপুরি দখলমুক্ত হয়নি নগরীর খালগুলো।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটিসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সামাজিক সংগঠন খাল দখল মুক্তকরণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৯
এমআরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।