ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্র্য লালন-পালন হয়: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্র্য লালন-পালন হয়: প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং

ঢাকা: ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্র্য বিমোচনের পরিবর্তে এটির লালন-পালন হয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত উন্নয়ন মেলা ২০১৯-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একসময় দেখেছি, কেউ কেউ ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে খুব বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

কিন্তু, ক্ষুদ্রঋণের ফলাফল যেটা, একসময় আমরাও এটাকে সমর্থন দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এর ফলে বোধহয় মানুষ দারিদ্র্যসীমার উপরে উঠতে পারবে। কিন্তু, যখন আমরা বিষয়টা আরও গভীরভাবে দেখলাম, দেখা গেলো আসলে এর মাধ্যমে ঠিক দারিদ্র্য বিমোচন হয় না, দারিদ্র্য লালনপালন হয়।

ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণ- এটা স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। যদিও আমাদের দেশে কেউ কেউ ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা সেজে বিশ্বে ভালো নাম-টামও করে ফেলেছেন। দেখা যায়, হয়তো নিজে নাম কামিয়েছেন, কিন্তু দেশের মানুষ ততটা সুফল পেতে পারেনি। এটা হলো বাস্তব।

শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষুদ্রঋণ জাতির পিতা যখন শুরু করেছিলেন, তখন বিআরডিবির মাধ্যমে এই ঋণ দেওয়া শুরু করেন। মানুষকে কীভাবে সমবায়ের মাধ্যমে একত্রিত করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করে তাদের দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে আনবেন, সেই পরিকল্পনাটাই জাতির পিতা নিয়েছিলেন।

বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে এসেছে, বিভিন্ন এনজিওর ক্ষুদ্রঋণের চড়া সুদ ও চক্রবৃদ্ধি সুদের বোঝা বইতে না পেরে নিঃস্ব হওয়া, এমনকি ভিটেমাটি, হাঁড়িপাতিল বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে অনেককে। একারণে দারিদ্র্য বিমোচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময় ক্ষুদ্রঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। এর জন্য সরকারও নামমাত্র সার্ভিস চার্জে বিভিন্ন সহযোগিতা দিচ্ছে।

সার্ভিস চার্জের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের একটি উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গৃহায়ণ তহবিল নামে একটা তহবিল বাংলাদেশ ব্যাংকে তৈরি করেছিলাম। আমরা এনজিওদের মাত্র এক শতাংশ সার্ভিস চার্জে টাকা দিতাম। তারা ঘর তৈরি করে দেবে, সেই সঙ্গে একটা স্যানিটারি ল্যাট্রিনও তৈরি করে দেবে। এখন বোধহয় দুই শতাংশ সার্ভিস চার্জ নেওয়া হয়। কিন্তু, এনজিওগুলো যাদের টাকা দেবে, তাদের কাছ থেকে পাঁচ শতাংশের বেশি সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে না।

‘আপনারা জানেন, এনজিওগুলো যখন টাকা ঋণ দেয়, সে ঋণের সুদ চক্রবৃদ্ধি হারে এমনভাবে বাড়তে থাকে, কখনো কখনো ৪০ ভাগ, ৪৭ ভাগ ঋণ তাদের সুদ দিতে হয়। মানুষ যখন আর দিতে পারে না, তখন একেবারে নিঃস্ব হয়ে যায়। সেই জিনিসটা যাতে না হয়, তার জন্য এই গৃহায়ণ তহবিল থেকে আমরা দিচ্ছি। ’

আরও পড়ুন> প্রতিটি পরিবার দারিদ্র্যমুক্ত করবো: প্রধানমন্ত্রী

অনুষ্ঠানে এ বছর পিকেএসএফ-এর আজীবন সম্মাননা পান সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী। তার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।  

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

শুরুতে পিকেএসএফ জাগরণের গান পরিবেশন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এমইউএম/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।