বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রতিবন্ধী নারীর অংশগ্রহণ’ শীর্ষক কর্মশালায় এ সব তথ্য উঠে এসেছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নারীদের জন্য নানামুখী উদ্যোগের মধ্যে ২১টি জেলায় সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবা প্রদান শীর্ষক প্রকল্প, ইনকাম জেনারেটিং অ্যাক্টিভিটিজ অব অ্যাড উপজেলা লেভেল, বিভিন্ন কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল, নগরভিত্তিক মহিলা উন্নয়ন ইত্যাদি।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী নারীদের কার্যকর অংশগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিবন্ধী নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু প্রবেশগম্যতা বা সংগতি পূর্ণতিপূর্ণ বাস্তবায়নের কারণে অনেকে চাকরি ধরে রাখতে পারচ্ছেন না। দুঃখজনক হলেও সত্য এখন পর্যন্ত কোনো গণপরিবহনে আসন বরাদ্দ ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না প্রতিবন্ধীরা।
তারা জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) নতুন ৬০০ বাসের মধ্যে কোনটিতেই প্রতিবন্ধীদের উপযোগী হাইড্রোলিক ‘র্যাম্পযুক্ত বাস’ আনা হয়নি। যদিও এ বহরের প্রতি ২০টি বাসের একটিতে র্যাম্প থাকবে বলে বিআরটিসি জানিয়েছে।
এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে সাধারণ নারীদের জন্য চালু হওয়া ‘দোলনচাঁপা’ বাসেও প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য হুইলচেয়ার নিয়ে বসার জন্য নির্ধারিত স্থানের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ট্রেন এবং লঞ্চে যাতায়াতের ক্ষেত্রে একই বাধা চোখে পড়ে। ট্রেনের টিকিটে প্রতিবন্ধীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ায় চলাচলের সুবিধা থাকলেও অন্যান্য পরিবহনে তা নেই। প্রতিবন্ধী নারীদের কার্যকর অংশগ্রহণ ছাড়া আমাদের সামগ্রিক উন্নয়ন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তাই প্রতিবন্ধী নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্য চেঞ্জ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান) আয়োজনে কর্মশালা সভাপতিত্ব করেন বি-স্ক্যানের সাধারণ সম্পাদক সালমা মাহবুব। এ কর্মশালায় আলোচনা অংশ নেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব উম্মে সালমা তানজিয়া ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব ড. এস এম আবুল কাশেম। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বি-স্ক্যাটের প্রকল্প কর্মকর্তা ও গবেষক নিশাদ আফরোজ। এ সময় বক্তব্য দেন ইফতেখার মাহমুদ, সাব্বির আহমেদ প্রমুখ।
আলোচকরা জনান, দেশে প্রতিবন্ধী মানুষদের সংখ্যা কত তার কোনো সঠিক তথ্য নেই। তবে সমাজসেবা অধিদফতের দাবি ১৭ লাখ ৪ হাজার ৩২২ জন। অন্যদিকে, বিবিএসের ২০১১ সালের আদমশুমারি এ সংখ্যা ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য উন্নয়নশীল দেশগুলাের মোট জনসংখ্যার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী মানুষ। প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা নির্ধারণের এ বাস্তবতায় দেশের প্রতিবন্ধী নারীদের সংখ্যা নির্ধারণ করার মত কোনো তথ্য, উপাত্ত কারও কাছে নেই। তবে আনুমানিক করা হয়, মোট প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যার প্রায় অর্ধেক প্রতিবন্ধী নারী।
বাংলাদেম সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
পিএস/ওএইচ/