ফটিক রায় পেশায় একজন কৃষক। স্বামী-স্ত্রীর সংসারে একমাত্র সম্পদ হিসেবে ছিলো বাগানটি।
এবিষয়ে ফটিক রায়ের স্ত্রী রেখা রাণী বাংলানিউজকে জানান, স্বামী-স্ত্রী মিলে আমার গহনা বিক্রির টাকা এবং গ্রাম থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদ নিয়ে বাগান তৈরি করি। ১ কিলোমিটার দূর থেকে কলসি দিয়ে পানি এনে গাছের যত্ন করেছি। দিনরাত বাগানে পরিশ্রম করেছি। সেই পরিশ্রম এক রাতেই মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।
ফটিক রায় বাংলানিউজকে জানান, বাগানটি তৈরি করতে আমাদের প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সম্পদ বলতে বাগান ছাড়া আর কিছুই নেই আমাদের। এবছরের ডিসেম্বর মাসে বাগানটি ১০ বছরের জন্য ১৭ লাখ টাকা দরে বিক্রির কথা হয়েছিল। কিন্তু গাছগুলো কেটে ফেলাতে বিক্রি হলো না। বাগান তৈরি করতে সুদে যে টাকা নিয়েছি তা কীভাবে শোধ করব। পথে বসে গেলাম আমরা।
গত বুধবার ১৩ নভেম্বর রাতে সাপাহার -পোরশা উপজেলার জামালপুর গ্রামের পশ্চিম ও দক্ষিণ পার্শ্বের মাঠে প্রায় ৬০ বিঘা জমির আমগাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। ফটিক ছাড়াও ওই মাঠে রায়হনের ১৮ বিঘা, রুবেল হোসেনর ১০, মুক্তার আলীর ১১.৫, আফজাল হোসেনের ১, নুরুলের ২, ফিরোজ হোসেনের ১, আফজালের ২.৫, আতাউরের ২, সেকেন্দার আলীর ২, সুবাস রায়ের ১.৫ এবং বিশ্বজিতের ১ বিঘা জমির আম গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এতে করে প্রায় কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে মালিকদের।
সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই বাংলানিউজকে জানান, গাছকাটার বিষয়ে আমরা বাগান মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের থেকে তথ্য নিয়ে এরইমধ্যে কিছু কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে তারা এখনো থানায় মামলা দায়ের করেননি। মামলা করলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান ওসি।
এবিষয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) কল্যাণ চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, সংবাদ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তাদের ক্ষতির সংখ্যা অনেক। তবে সরকারের ভিবিন্ন প্রকল্পের আওতায় এনে কীভাবে তাদের সহযোগিতা করা যায় এবিষয়ে উপজেলা প্রসাশন কাজ করবে।
**৬০ বিঘা জমির আট হাজার আমগাছ কেটে দিলো দুর্বৃত্তরা
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এসএইচ