বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) কাস্টমস কমিশনারকে বদলি করা হয়। তার স্থানে বেনাপোলে যোগদান করবেন ড. মইনুল হক।
জানা যায়, দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকায় যশোর-বেনাপোল প্রধান সড়কের পাশে কাস্টমস হাউজটি অবস্থিত। ভবনটি ঢোকার মুখে প্রধান ফটকে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। এছাড়া কাস্টমস হাউজের গুরুত্বপূর্ণ ভবনের সামনেও রয়েছে সিসি ক্যামেরা। যে লকারটি ভাঙা হয় সেটির সামনেও ছিল সিসি ক্যামেরা। ভবনটির প্রধান গেট ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিভিন্ন আবাসিক ভবনের সামনের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় কাস্টমস সদস্যেদের পাশাপাশি রয়েছে ৩০ জন সসস্ত্র আনসার সদস্য। তবে যে ভবনটিতে সরকারের এতো মূল্যবান সম্পদ রয়েছে সেখানে কোনো সসস্ত্র নিরাপত্তা কর্মীর পাহারা ছিল না। এমন কি সেখানে যে সিসি ক্যামেরা ছিল সেটিও তিনদিন বন্ধ ছিল। যে ভবনটিতে লকার রুম ছিল তার পেছনের অংশ যথেষ্ট নিরাপত্তাহীন অবস্থা দেখা যায়। এ যেন সরকারি সম্পদ বলে অবহেলা। এতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্বেও এমন চুরি কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার শামিম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, চুরির ঘটনায় ৯ সদস্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন ও থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য উদঘাটনে কাজ করছেন।
ভারত-বাংলাদেশ ইমপোর্ট এক্সপোর্ট ল্যান্ডপোর্ট সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি এতো মূল্যবান সম্পদ বছরের পর বছর এভাবে অযন্তে কাস্টমস হাউজের লকারে না রেখে ব্যাংকের ভোল্টে রাখলে হয়তো এমন ক্ষতির হতো না। যে চক্রটি এ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে তা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা।
এ সময় তিনি ভ্যবিষ্যতে চুরি রোধে বেনাপোল কাস্টমসে বহিরাগতদের অবস্থান ও প্রবেশের কড়াকড়ি আরোপের দাবি জানান।
বেনাপোল কাস্টমসের নিরাপত্তা সংস্থা আনসারের পিসি মাহাবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তাদের যথেষ্ট জনবল রয়েছে। তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী কাস্টমস হাউজের বিভিন্নস্থানে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু যেখানে লকার রাখা আছে সে বিষয়ে তারা জানতেন না।
বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্টথানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় দুই কাস্টমস কর্মকর্তাসহ তিন এনজিও সদস্যকে আটক করা হয় এবং তদন্তের জন্য আটকদের ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে কাস্টমস কর্মকর্তারা অফিসে প্রবেশ করতে গিয়ে দেখেন কাস্টমস হাউজের পুরানো ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত লকারের রুমের দরজার তালা ভাঙা রয়েছে। পরে কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টা জানানো হলে চুরির রহস্য উদঘাটনে বিভিন্ন প্রশাসনিক গোয়েন্দা সংস্থাকে খবর দেওয়া হয়। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাস্টমসের লকারের দায়িত্বে থাকা এক ইন্সেপেক্টরসহ চার কাস্টমস সিপাইকে সাময়িক বরখাস্ত করে তাদের ও তিন এনজিও সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতেই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। লকার থেকে ২৯ কেজি স্বর্ণবারের মধ্যে ১৯ কেজি ৩৮০ গ্রাম স্বর্ণচুরি হয়। তবে বৈদেশিক মুদ্রাসহ অনান্য দলিলাদি ও মূল্যবান সম্পদ অক্ষত ছিল লকারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এনটি