ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উল্লাপাড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা, উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে শতশত মানুষ

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
উল্লাপাড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা, উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে শতশত মানুষ

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ইঞ্জিনসহ আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় ট্রেনের ইঞ্জিন ও একটি বগি পুড়ে গেছে। হেলে কাত হয়ে পড়ে যায় লাইনচ্যুত কোচগুলো। এসব কোচে শতশত যাত্রী থাকায় ব্যাপক প্রাণহানির আশংকা ছিল। তবে সৌভাগ্যবশত নিহত বা গুরুতর আহত হননি কেউ। পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও তারাও আশঙ্কামুক্ত। 

দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় জনসাধারণ উদ্ধারের ঝাঁপিয়ে পড়ায় জানমালের বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পাশাপাশি দ্রুতগতিতে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলায় ক্ষতির পরিমাণ বেশ কম হয়েছে।

 

দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের যাত্রী, প্রত্যক্ষদর্শী ও রেলওয়ে স্টেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা যায়।

কথা হয় দুর্ঘটনা কবলিত ‘রংপুর এক্সপ্রেস’র যাত্রী নওগাঁ জেলার বাসিন্দা লিটন শেখ, নয়ন মাহমুদ ও বগুড়ার রায়হানের সঙ্গে। তারা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পেছনের বগিতে ছিলাম। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বেরিয়ে আসি। ইঞ্জিনে আগুন ধরায় কালো ধোঁয়ায় সয়লাব হয়েছিল সমস্ত এলাকাজুড়ে। এর মধ্যেই এলাকার শতশত মানুষ এগিয়ে এসে ট্রেন থেকে যাত্রীদের বের করার চেষ্টা করে। ট্রেনের পেছনের বগিতে থাকা যাত্রীরাও উদ্ধারকাজে অংশ নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী বেতগাড়ি গ্রামের মোশারফ হোসেন, বিশ্বজিৎ রায়, গোডাউন শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় দোকানদার নয়ন সরকার বাংলানিউজকে জানান, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ওভার ব্রিজের কর্মরত নির্মাণ শ্রমিক, গোডাউন শ্রমিক, রেলওয়ে স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড এলাকার শতশত দোকানিরা ছুটে আসেন। এরপর লাইনচ্যুত কোচগুলোতে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করেন তারা।  

স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হীরা সরকার বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমে ট্রেনটির ইঞ্জিনে আগুন লাগে। ইঞ্জিন থেকে ছড়িয়ে পাশে থাকা এসি বগিতেও আগুন লেগে যায়। ওই বগিতে বেশ কয়েকজন যাত্রী ছিল। উপস্থিত জনগণ পাথর দিয়ে কোচের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে যাত্রীদের উদ্ধার করে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। জনগণের সহায়তায় প্রায় দেড়ঘণ্টা প্রচেষ্টায় আগুন নিভিয়ে ফেলেন তারা।  

উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের পয়েন্টম্যান আমজাদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমে শতশত মানুষ এসে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। সবকিছু দ্রুতগতিতে হওয়ায় জানমালের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।  

উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র এসএম নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি শতশত জনগণ উদ্ধার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হ্যান্ড মাইক দিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।

উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার (এসও) নাদির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। তবে আমরা পৌঁছানোর আগেই আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয় জনগণ। আমরা গিয়ে কোনো আহতকে পাইনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।