এদিকে, মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে প্রায় কেঁদে ফেলেছেন মা মলিকা বেগম। মেয়েকে একটু বুক ভরে দেখতে এবং ঘরে তুলতে সময় পার করছেন তিনি।
এর আগে, মেয়ের নির্যাতনের কথা শুনতে পেয়ে চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া ভুলে দুশ্চিন্তায় দিন কাটিয়েছেন মলিকা বেগম।
সুমির বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতী সেনপাড়া গ্রামে। সুমির বাবা রফিকুল ইসলাম, পেশায় একজন দিনমজুর। চার-ভাই বোনের মধ্যে সুমি বড়। দুই বছর আগে আশুলিয়ার চারাবাগের নূরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমির।
>>>অবশেষে দেশে ফিরলেন নির্যাতিত সুমিসহ ৯১ নারী
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মোবাইল ফেনে সুমির বাবা-মা বাংলানিউজকে জানান, সকালে এয়ারপোর্টে পৌঁছেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন সুমি। এমনকি তিনি পঞ্চগড়ের উদ্দেশেও রওনা হয়েছেন।
মলিকা বেগম বাংলানিউজকে জানান, আমরা সুমির বাড়ি আসার অপেক্ষা করছি। মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে এনে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, অভাব অনটনের সংসারে কিছু টাকা কামানোর জন্য বিদেশে গিয়েছিল মেয়েটা (সুমি)। কোনোদিন ভাবতে পারিনি এমন অবস্থার শিকার হবে আমার এই মেয়েটি।
এদিকে, সুমিকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সুমি আক্তার পঞ্চগড় জেলার বোদা সদর থানার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। দুই বছর আগে আশুলিয়ার চারাবাগের নুরুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
>>>‘নার্স ভিসার কথা বলে সৌদি পাঠানো হয় সুমিকে’
সম্প্রতি ফেসবুকে কান্নাজড়িত কন্ঠে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের কথা বলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান সুমি। পরবর্তীতে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
ভিডিওটিতে সুমি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমি আমার সন্তান ও পরিবারের কাছে ফিরতে চাই। আমাকে আমার পরিবারের কাছে নিয়ে যান। এখানে আমার ওপর অনেক নির্যাতন হয়। আর কিছুদিন থাকলে হয়তো মরেই যাবো। তাই প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনুরোধ আপনারা আমাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যান। ’
বাংলানিউজে এমন খবর প্রকাশের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সুমিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সিরাজুল ইসলামকে নির্দেশ দেন।
এরপর সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে সুমিকে সৌদি আরবের জেদ্দার দক্ষিণ-দক্ষিণে নাজরান এলাকার কর্মস্থল থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশের তত্ত্বাবধানে নাজরান শহরের একটি সেইফ হোমে ছিলেন তিনি।
পরদিন মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে দেওয়া এক চিঠিতে সুমি আক্তারকে দেশে ফেরাতে ট্রাভেল এজেন্সি ‘রূপসী বাংলা ওভারসিজ’কে ২২ হাজার রিয়াল (প্রায় পাঁচ লাখ টাকা) ও প্লেনের টিকিট দেওয়ার প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে নাজরান শহরের শ্রম আদালতে সুমিকে দেশে ফেরার ‘ফাইনাল এক্সিট’ দেয়। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এনটি