সিডরের পরে বিধ্বস্ত শরণখোলায় বহুমুখী উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। কিন্তু ওই এলাকার লোকদের একমাত্র দাবি ছিল বলেশ্বর নদীর পাশ থেকে একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
এ বাঁধের সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা হচ্ছে, শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী, গাবতলা ও দক্ষিণ সাউথখালী এলাকা সংশ্লিষ্ট বলেশ্বর নদী সংলগ্ন বাঁধ। এ জায়গাগুলো থেকে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধটি বারবার ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসী সব সময় আতঙ্কে থাকে। এলাকাবাসীর দাবি বলেশ্বর নদী শাসন না করে ওই স্থানে বাঁধ নির্মাণ করলে বাঁধ কখনও টেকানো সম্ভব নয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, বরাদ্দ না থাকায় নদী শাসন সম্ভব হচ্ছে না।
সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন, একযুগ আগের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের জলোচ্ছ্বাসের কথা মনে পড়লে আতকে উঠি। জলোচ্ছ্বাসে সাউথখালী ইউনিয়নের অনেক মানুষ মারা যায়। তারপর থেকে আমাদের দাবি ছিল এ এলাকায় একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের। সরকার আমাদের জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা খুশি। কিন্তু বাঁধ নির্মাণ কাজের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে, তবে কাজ এখনো চলছে। আমরা ত্রাণ চাই না, আমরা চাই এ বাঁধটি যেন নদী শাসন করে টেকসই করা হয়।
শরণখোলার বগী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিডরে অনেককে হারিয়েছি। ভবিষ্যতে কোনো দুর্যোগে আর কাউকে হারাতে চাই না। সরকারের কাছে একটাই দাবি অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে এ বাঁধটি সম্পূর্ণ করে আমাদের বাঁচার ব্যবস্থা করে দিক।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৭ সালের সিডরে আমাদের শরণখোলায় সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনে দাবি এ বেড়িবাঁধ। এটি নির্মাণ করছে সরকার। বাঁধটি নদী শাসন করে যেন টেকসই করা হয় সেই দাবি জানাই।
উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, উপকূলের মানুষকে জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে সরকার বাঁধ উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। শরণখোলা উপজেলার ৩৫/১ পোল্ডারের ৬২ কিলোমিটার অংশের বেড়িবাঁধ বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা এই বাঁধের ৭০ ভাগ কাজ শেষ করেছি। আগামী ২০২০ সালের জুন মাস নাগাদ এই বাঁধের কাজ শেষ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। এটি নির্মাণ হলে ওই এলাকার মানুষ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এসএইচ