ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পেঁয়াজ ছাড়াই পেঁয়াজু-শিঙাড়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
পেঁয়াজ ছাড়াই পেঁয়াজু-শিঙাড়া পেঁয়াজ ছাড়াই পেঁয়াজু-শিঙাড়া খাচ্ছে ভোজনরসিকরা। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: পেঁয়াজু-শিঙাড়া এখনও অনেকের প্রিয় খাবার, বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়াদের টিফিনে তো বিখ্যাত। এর পাশাপাশি রয়েছে ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি। তবে এলাকাভেদে যে খাবারটিই প্রিয় হোক পেঁয়াজের ব্যবহার কিন্তু সবকটিতেই রয়েছে। আবার পেঁয়াজের ব্যবহার কমেছে হোটেলে খাবারে। তাদের রান্নায় কিংবা সালাদে নেই তেমন পেঁয়াজের ব্যবহার। ডিম মামলেট-ওমলেটে পেঁয়াজের পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে কাঁচা মরিচ আরও ধনিয়াপাতা। সম্প্রতি পেঁয়াজের দর-দাম বাঁধ সাধে এসব খাবারে।

পেঁয়াজ ছাড়া পেঁয়াজু কী হয়। কিন্তু এখন নামে পেঁয়াজু হলেও বাস্তবে পেঁয়াজের ব্যবহার নেই।

পেঁয়াজু তৈরিতে এখন ব্যবহার হচ্ছে বাঁধাকপি আর আলু। বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলছেন দোকানের কর্মচারী।                                         দেখতে এক হলেও স্বাদে রয়েছে ভিন্নতা। এভাবে অন্যসব খাবারেই কমেছে পেঁয়াজের ব্যবহার অথবা পেঁয়াজের পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে অন্য কোনো সবজি। পেঁয়াজ না থাকায় এসব খাবারে স্বাদও কমেছে আগের থেকে অনেক কম।

রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় ওয়ালী অ্যাপারেলের সামনে ফুটপাতে পেঁয়াজু-শিঙাড়া বিক্রি করেন ঝিনাইদহের আলী। তিনি পেঁয়াজ ছাড়াই তৈরি করছেন পেঁয়াজু-শিঙাড়া। এর পরিবর্তে ব্যবহার করছেন আলু, পেঁপে আর বাঁধাকপির।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, যা বিক্রি হয় তাই দিয়ে সংসার চলে, সবকিছুর দাম বেড়েছে। সবদিক হিসেব করলে লাভের অংশ খুবই কম। তবে সম্প্রতি পেঁয়াজের লাগামহীন দর বৃদ্ধির কারণে এর ব্যবহার করলে পেঁয়াজুতে কিছুই (লাভ) থাকবে না। তাই পেঁয়াজ ছাড়াই পেঁয়াজু তৈরি করা হচ্ছে।

এতে স্বাদের কম-বেশি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পেঁয়াজু স্বাদ আনে পেঁয়াজে। পেঁয়াজ না থাকলে স্বাদ একটু কমে আসবে এটাই স্বাভাবিক। খিলগাঁও বিসমিল্লাহ হোটেলে ডিম মামলেট কাঁচা মরিচ ও ধনিয়াপাতা দিয়ে। ডিমে দেওয়া হচ্ছে না পেঁয়াজ।

ভোক্তা প্রশ্ন করলে হোটেল কর্মচারী আরমান ভোক্তাকে বলেন, স্যার এখন পেঁয়াজের দাম বেশি, পেঁয়াজ দিলে দামে পোশায় না, তাই পেঁয়াজের ব্যবহার নেই। পেঁয়াজ ছাড়া ডিম। পল্টন আজাদ প্রোডাকসের পলিতে ঝালমুড়ি ও ফুসকা বিক্রেতা পেঁয়াজ ছাড়াই ক্রেতাদের এগুলো খাওয়াচ্ছেন। পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারাও সাহস করে বলতে পারছেন না পেঁয়াজ কেনো দেননি। দোকানি নিরবেই বিক্রি করে চলেছেন পেঁয়াজ আবশ্যক এসব খাবার, পেঁয়াজ ছাড়াই।

দেশে বর্তমানে পেঁয়াজ সংকট চলছে। অবস্থা বেগতিক দেখে সরকার কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি করেছে ইতোমধ্যে। এখন আরও আমদানি পেঁয়াজ দেশে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। যা আশার খবর ক্রেতাদের কাছে। তবে হতাশার কথাও রয়েছে তাদের কাছে। বর্তমানে দামি এবং অতিপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটি থেকে অসাধু ব্যবসায়ীদের মর্জি মতোই দাম রাখা হচ্ছে ক্রেতার কাছ থেকে। ইচ্ছেমতো দর-দাম ঠিক করছেন নিজেরাই।

খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির ব্যবধান ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বিস্তর পার্থক্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের পাইকারি বাজার এখনও চড়া রয়েছে। সেখানে দাম কমলে আমাদের এখানেও দাম কমে আসবে।

রাজধানীর পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে প্রতিকেজি পাইকারি দেশী পেঁয়াজ বর্তমানে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি চলছে। বার্মা পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, মিশর পেঁয়াজ বিক্রি চলছে ১৩০ টাকা কেজি দরে।

অন্যদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি চলছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। বার্মা পেয়াজ ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি, মিশির পেঁয়াজ বিক্রি চলছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজিদরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
ইএআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।