বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার এই নারী জানান, গত বছরও পান চাষ করেই লাখ টাকা আয় করেছিলেন তিনি, যা দিয়ে সারা বছর চলেছে তার সংসার। কিন্তু বর্তমানে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এই বিধবা নারী।
শুধু কুমোদিনীই নন, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর ও বাবুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এমন ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষি রয়েছে আরও। আবার শুধু পানের বরজই নয়, বড় ঋণ নিয়ে কেউ করেছেন আইসমিল, মুরগির খামার, কেউ ফসলি জমি; যার অধিকাংশই ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের প্লাবনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া, ঝড়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্কুল, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, পানের বরজ, গাছপালা, গবাদিপশুর খামার সবখানেই চিহ্ন রেখে গেছে তাণ্ডবের। হতাহতের ঘটনা তেমন না ঘটলেও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতিতে পড়তে হয়েছে এসব এলাকার দুর্গত মানুষদের। তার ওপর রয়েছে ঋণের বোঝা। এতে রীতিমতো দিশেহারা তারা।
তবে, গ্রামীণ জনপদের খেটে খাওয়া এই মানুষগুলো বিশ্বাস করে, সরকারের সহয়তা পেলে জীবিকার তাগিতে আবারও ঘুরে দাঁড়াবেন সবাই। স্থানীয় প্রশাসনও আশ্বাস দিয়েছে, দুর্গতদের সহয়তায় সর্বাত্মক চেষ্টা করবে তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বাংলানিউজকে জানান, আগৈলঝাড়াসহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষ মূলত পান চাষের ওপর নির্ভরশীল। এবছর ২৫০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক বরজ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হরিদাস শিকারী বাংলানিউজকে জানান, বরিশাল জেলায় পান চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৬৮২ হেক্টর জমিতে, আক্রান্ত হয়েছে ২০ ভাগ জমি। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া, গৌরনদী, উজিরপুর উপজেলায় পান বরজের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া, বরিশাল বিভাগে পান চাষ হয়েছিল ৪ হাজার ১৩৮ হেক্টর জমিতে, এর মধ্যে দুর্যোগ আক্রান্ত হয়েছে ৬১৬ হেক্টর।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, কৃষকদের প্রণোদনা কার্যক্রম চলছে। চাষিদের মাঠে ধরে রাখতে ও চাষাবাদে উৎসাহিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রণোদনা কার্যক্রমের মধ্যে এবার যারা ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
এমএস/একে