বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের প্রাণকেন্দ্র পূর্ব লন্ডনের এক মিলনায়তনে যুক্তরাজ্যের বঙ্গবন্ধু ‘শেখ মুজিব রিসার্স সেন্টার’ ও এটিএন বাংলার উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সোমবার (১৮ নভেম্বর) লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম, যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট রাজনীতিক স্টিফেন টিমস ও রোশনারা আলী এবং লন্ডন বোরাগ অফ ক্রোডানের মেয়র হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।
লন্ডনসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তি, গবেষক, পেশাজীবী, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক ও সংস্কৃতিকর্মীরা দু’ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। এ অনুষ্ঠানে একশত বাংলাদেশি-ব্রিটিশ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের চিরচেনা গানগুলো নতুন করে পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আবদুল মালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা ও খাদ্য উৎপাদনের সাফল্যে বাংলাদেশ বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শেখ হাসিনার কার্যকর নীতিমালা ও পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে এখন অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সাংস্কৃতিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক অনেক বেশি সুদৃঢ়।
তথ্য সচিব বলেন, ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের শুধু আশ্রয়ই নয়, প্রতিদিন তাদের খাওয়া-পরা, চিকিৎসা, নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় সব কিছু দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে মানবতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। এতবড় একটি কাজ সম্ভব হয়েছে কেবলমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র জাতি রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ বলেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে এগিয়ে চলেছে। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২১ সালে আমাদের দেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যুক্তরাজ্যের জনগণ ও বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের অতুলনীয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান জেল থেকে মুক্তি পেয়ে প্রথম লন্ডনেই আসেন। এটাই প্রমাণ করে যুক্তরাজ্যের সরকার ও মানুষ বিশেষ করে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা কতখানি গভীর ছিল। এজন্য আগামী বছর লন্ডনসহ বিশ্বের প্রধান ১০টি শহরে বাংলাদেশের সঙ্গে যুগপৎ জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী বিশেষভাবে পালন করা হবে। তিনি জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সবাইকে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
এর আগে তথ্য সচিব পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন লাইব্রেরিতে বাংলাদেশ বইমেলা ২০১৯-এ গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন ও মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও অন্যান্য স্টল ঘুরে দেখেন।
যুক্তরাজ্যের সমি¥লিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ১৬ ও ১৭ নভেম্বর দু'দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ বইমেলায় মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন ড. গওহর রিজভী। মেলার উদ্বোধক ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন সস্পর্কিত জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এতে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
টিআর/ওএইচ/