ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাবে, কিন্তু রাতারাতি সম্ভব নয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
‘রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাবে, কিন্তু রাতারাতি সম্ভব নয়’ গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা/ছবি- শাকিল আহমেদ

ঢাকা: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, এই মুহূর্তে রোহিঙ্গা ইস্যু পুরো বিশ্বে একটি আলোচিত বিষয়। আমরা ইস্যুটি আলোচিত করতে চেষ্টা করেছি, সেটি পেরেছিও। অবশ্যই এর একটা সমাধানও হবে। কিন্তু রাতারাতি তা সম্ভব নয়।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) জাতীর প্রেসক্লাবে ‘আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০ থেকে ২৫ বছর আগে থেকেই রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে বসবাস করছে।

মিয়ানমার থেকে নতুন করে রোহিঙ্গারা এসে সর্বশেষ এ সংখ্যা ১১ লাখে দাঁড়িয়েছে। এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, উখিয়ায় স্থায়ী বাসিন্দা ৪ লাখ আর রোহিঙ্গা ১১ লাখ। এ কারণে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। প্রথম থেকেই রোহিঙ্গাদের জন্য দেশি-বিদেশি যেসব অনুদান আসতো সেগুলোর ১৫ শতাংশ স্থানীয়দের জন্য ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে সেটি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বলতে গেলে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার মানুষের চেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলার মানুষ।

‘অনেকের দাবি চীন, জাপান ও ভারত রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের সাহায্য করছে না। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। তারা জাতিসংঘসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আমাদের পক্ষেই কথা বলেছেন,’ বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া চলছে। বিচারে মিয়ানমারের শীর্ষ ২০ জনও অভিযুক্ত হন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের গ্রেফতার করেছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আলোচকরা বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত এক বছরে ৫০ হাজার নবজাতক জন্মগ্রহণ করেছে। বর্তমানে সেখানে গর্ভবতী মায়ের সংখ্যা ২০ হাজার। সেই হিসাবে চলতি বছর শেষে ১১ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে যোগ হবে আরও প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা। এমনভাবে চলতে থাকলে দ্রুতগতিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য ভয়েস তৈরি ও আন্তর্জাতিক লবির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টারি তৈরি করে বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে হবে। মিয়ানমারকে চাপের মধ্যে রাখতে হবে। পাশাপাশি তৃতীয় কোনো দেশকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। নইলে ১০ বছরেও এই সমস্যার সমাধান হবে না’, বলেন বক্তারা।

তারা বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশকে সেফ জোন মনে করেই অবস্থান নিয়েছে। মিয়ানমার এই বিষয়টা নিয়ে যেভাবে স্টাডি করেছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেভাবে স্টাডি করেনি বলে মনে করেন তারা।

আইসিএলডিএস-ভোরের কাগজ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আইসিএলডিএস’র সভাপতি মোহাম্মদ জমির।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল। এছাড়া বৈঠকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মোবিন চৌধুরী, সাংবাদিক ও কলামিস্ট অজয় দাশগুপ্ত, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, উখিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
পিএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।