দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন এলাকায় ওই কর্মকাণ্ড চালিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন এ দম্পতি। কিছুদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে চলছিল তাদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) জেলা শহরের মুন্সেফপাড়ার একটি বাসা থেকে স্থানীয় লোকজন প্রতারক দম্পতিকে আটক করে পুলিশের কাছে সোর্পদ করে। আটক জুয়েল মাহমুদ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফ্ল্যাটবাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে কৌশলে এ দম্পতি সবকিছু লুটে নেয়। কিছুদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের ফুলবাড়ীয়ায় মহিউদ্দিন আহমেদ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে আসেন এ দম্পতি। ফ্ল্যাটটি দেখে তারা পছন্দ করে দুই হাজার টাকা অগ্রিম ভাড়া পরিশোধ করেন। এর ক’দিন পর ১৩ নভেম্বর তারা আবারও আসেন। এ সময় তারা বাড়ির মালিক মহিউদ্দিনের পরিবারকে নিজেদের পুকুরের বলে কিছু মাছ উপহার দিয়ে তাদের মন জয় করে নেন।
এরমধ্যে তারা স্বর্ণের কাজ জানেন বলে মহিউদ্দিনের স্ত্রী ও মেয়েকে বলেন, ঘরে বসেই তারা স্বর্ণালঙ্কার পরিষ্কার করে চকচকে করে ফেলতে পারেন। তাদের কথা শুনে মহিউদ্দিনের স্ত্রী ও মেয়ে তাদের স্বর্ণের গহনা পরিষ্কার করতে দেন। এ সময় তারা পানি পান করতে চাইলে মহিউদ্দিনের স্ত্রী পানি নিয়ে এসে দেখেন, প্রতারক দম্পতি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়েছেন। অন্যদিকে তার মেয়ে মাটিতে অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। পরে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে মহিউদ্দিনের মেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।
এ ঘটনার ক’দিন পর শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) মহিউদ্দিনের বাড়ির পাশের এলাকা মুন্সেফপাড়ায় রফিকুল ইসলামের বাড়িতে একই কায়দায় বাসা ভাড়া নিতে যান এ দম্পতি। এ সময় ওই প্রতারক দম্পতি রফিকুলের পরিবারকে জানিয়ে আসেন তারা রোববার আসবেন বাসা ভাড়ার চুক্তি করতে। এরইমধ্যে মহিউদ্দিনের মেয়ের দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসটি রফিকুলের মেয়ের চোখে পড়ে। রফিকুল ইসলামের মেয়ে মহিউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটির মিল খুঁজে পান।
দু’পরিবার রোববার প্রতারক দম্পতিকে আটক করতে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু রোববার তারা না আসায় ফোন দিয়ে সোমবার আসার জন্য বলা হয়। সোমবার দুপুরে প্রতারক দম্পতি রফিকুলের বাড়িতে ফলমূলসহ আসেন। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় ওই প্রতারক দম্পতিকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
এর আগে গত ৫ নভেম্বর কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানা এলাকায় মাতৃকা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির মিন্টুর বাড়িতে বাসা ভাড়া নিতে যান এ দম্পতি। পরে তারা তিন লাখ ৮০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যান। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় এই দম্পতি বাসা ভাড়ার কথা বলে প্রতারণা করে স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শিমুল পারভেজ বাংলানিউজকে জানান, প্রতারক এ দম্পতিকে আটকের খবর জেনে অনেক ভুক্তভোগী সদর থানায় এসেছেন। তারা তাদের শনাক্ত করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
এবি/এএটি