কিছুদিন আগে শহরটির বঙ্গবন্ধু সড়কে বেশি দেখা গেলেও সম্প্রতি অলিগলিতেও দেখা যাচ্ছে বেদেনীদের। শুধু কটূকথাই নয়, প্রায়ই বাক্সের সাপের ভয় দেখিয়ে মানুষের টাকা আদায় করে নেন তারা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টাকা না দেওয়া পর্যন্ত পথ আগলে থাকেন বেদেনীরা। ১০ থেকে ২০ টাকা দিলেও পথ ছাড়েন না। বরং ভয় দেখিয়ে কমপক্ষে ১০০ টাকা, কখনও সুযোগ বুঝে এর থেকে বেশিও আদায় করে নেন তারা। টাকা না দিলে কথাকাটাকাটি ও অশ্রাব্য গালিও দিতে শুরু করেন।
স্থানীয় দোকানি ও ব্যবসায়ীরা জানান, নিয়মিত চাঁদা তুলতে আসে অনেক বেদেনী। টাকা না দিলে দোকানে আসা ক্রেতাদের ভয় দেখানো শুরু করেন। কবা এছাড়া ব্যবসায়ীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায়ও জড়িয়ে পড়েন তারা।
বেদেনী মহুয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা কী করমু বলেন! কিচ্ছু কিন্না খাইতে পারি না। আগে ১০ থেকে ২০ টাকা পাইলেই হইতো আমগো, অহন তো অয়না। না খাইয়াও তো থাকবার পারি না পেটের জ্বালায়। তাই নামছি রাস্তায়। ’
তিনি বলেন, একসময় গ্রামে গ্রামে সাপের খেলা দেখাতাম। সিঙ্গা লাগানো, দাঁতের পোকা তোলা, তাবিজ বিক্রি, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার মতো নানা ব্যবসা ছিল আমাদের। এখন আর তেমন নেই এসব।
বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলার সময়ই তিনি গেয়ে ওঠেন,‘ও রানি সালাম বারে বার, আমার নামটি জোছনা বানু, আমি সাপ খেলা দেখাই, এই সিঙ্গা লাগাইবেন নি?’
মহুয়ার কথা থেকেই বোঝা যায়, আজকাল এমন খেলা দেখিয়ে আয় হয় না বেদেদের। নিজ ভিটা নেই, ঘুরে ঘুরে সাপ খেলা দেখানোই এদের পেশা। তাই জীবীকার সন্ধানে এখন গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হয়েছেন তারা। বিকল্প কাজে একদিকে নেই সুযোগ, অন্যদিকে, বেদেদের আগ্রহও কম। খেয়ে-পরে বাঁচতে হলে এভাবে টাকা রোজগার না করে তাদের উপায়ও নেই।
স্থানীয়রা বলছে, অনৈতিকভাবে টাকা আদায়ের কারণে বেদেনীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
জোর করে টাকা আদায় করা কী ধরনের ব্যবসা- এমন প্রশ্নও করছেন অনেকে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি পদক্ষেপ নিয়ে বেদেনীদের আয়ের অন্য উৎস নির্ধারণ করে দেয়, তবেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে জানান এসব ভুক্তভোগীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
কেএসডি/টিএ