নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনে নয় দফা দাবিতে বুধবার (২০ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
মালিক-শ্রমিকদের চলমান কর্মবিরতি প্রসঙ্গে একান্ত আলাপে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি হাজি মো. তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার বাংলানিউজকে এ কথা বলেন।
নতুন সড়ক পরিবহন আইনের কোন কোন বিষয়ে আপনাদের আপত্তি রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে কি, নতুন সড়ক পরিবহন আইনে আমাদের গাড়ি চালানোর আর কোনো সুযোগ নেই। আমাদের গাড়ির বডি ২০ ফুট। গার্মেন্টসের বিশ ফুটের যে কন্টেইনার বিদেশ থেকে আসে, বিদেশে সেগুলো মেশিন দিয়ে লোড করা হলেও আমাদের দেশে হ্যান্ড লোড করা হয়। যার ফলে গার্মেন্টসের বিশ ফুটের কন্টেইনার আমাদের বিশ ফুটের গাড়িতে ঢুকে না। এই কারণে আমদের গাড়ির বডি ২ ফুট বাড়িয়ে বানানো হয়। আমাদের গাড়িগুলোর ফিটনেস প্রতি বছর পরীক্ষা করে দেখা হয়। নতুন সড়ক পরিবহন আইনে গাড়ির যদি কোনোরকম পরিবর্তন করা হয় তাহলে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, ছয় মাসের জেল অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এটা মালিকদের জন্য একটি বিরাট সমস্যা।
তিনি আরো বলেন, গাড়ির ড্রাইভারদের ক্ষেত্রে সমস্যা হলো বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ড্রাইভারদের লাইসেন্স দিয়ে থাকে। এখানে বিআরটিএ এবং পুলিশের মধ্যে ‘ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। ষড়যন্ত্র যদি না-ই থাকে তাহলে কেন যেসব ড্রাইভার বড় কাভার্ডভ্যান চালায়, তাকে হালকা এবং মাঝারি যানবাহন চালানোর লাইসেন্স দেওয়া হবে। কেন তাকে ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স দেওয়া হবে না। এই লাইসেন্স নিয়ে ড্রাইভাররা সড়কে গাড়ি চালালেই ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্ন ধরনের হয়রানি এবং জরিমানা করে। আগে যে জরিমানা ছিল ৫০০ টাকা নতুন আইনের সেটা ২০ হাজার টাকা, ২০০ টাকার জরিমানা এখন ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড়াইলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। অথচ রাস্তার পাশে গাড়ি রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। যেখানে গাড়ি রেখে ড্রাইভার বাথরুম ব্যবহার করবে। এইসব নির্যাতনের কারণে মালিক এবং শ্রমিকরা গাড়ি চালাতে চাইছে না।
সড়ক দুর্ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, ড্রাইভার যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটায় তাহলে মামলার চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন হবে না। তাহলে তার পরিবারটা চালাবে কে? পরিবহন আইন করার আগে আমরা ১১১ দফা সুপারিশ দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সুপারিশ অনুযায়ী আইন করা হয়নি। জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাধ্য হয়ে মালিক এবং শ্রমিক ঐক্য পরিষদ কর্মবিরতি পালন করছে।
সন্ধ্যার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের আলোচনা রয়েছে, তিনি যদি আমাদেরকে দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন তাহলেই আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবো, বলেন তোফাজ্জল হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৯
আরকেআর/জেডএস