বর্তমানে বিলকিস স্বামী রাজিব, শ্বশুর আনারুল ও শাশুড়ি আশানুর খাতুনের মারধরে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে গৃহবধূ বিলকিসকে নির্যাতন করে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন বিলকিসের শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী কোহিনুর খাতুন জানান, ৫ বছর আগে রাজিবের সঙ্গে বিয়ে হয় রোজিনা খাতুন নামে এক মেয়ের। বিয়ের এক মাসের মাথায় রাজিব মালয়েশিয়ায় যান শ্রমিকের কাজ করতে। সেখানে গিয়ে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে মোবাইল ফোনে বিয়ে করে দুবাই থাকা তিন সন্তানের জননী বিলকিসকে। আজ থেকে ৩-৪ মাস আগে প্রথমে রাজিব পরে বিলকিস কাকিলাদহ গ্রামে চলে আসেন। এসময় বিলকিস সঙ্গে করে প্রায় ৮/১০ লাখ নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে আসেন। কিন্তু রাজিবের প্রথম স্ত্রী রোজিনা বিলকিসকে মেনে নেননি। রোজিনা সাড়ে ৪ লাখ টাকা দাবি করে রাজিবের কাছে তালাক চান। পরে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার মাধ্যমে তালাক নেন রোজিনা।
এরই মধ্যে মাঠে জমি কিনে ও বাড়ি করে বিলকিসের আনা টাকাগুলো প্রায় শেষ করে ফেলেন রাজিব ও তার পরিবার। এর পর থেকে বিলকিসের ওপর শুরু অত্যাচার। এর জেরে বুধবার সকালে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে বেধরক মারধর করে বিলকিসকে। পরে তাকে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এদিকে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানায়, পুনরায় টাকা আনা এবং রাজিবকে তালাক দিয়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রায় প্রতিনিয়ত বিলকিসের ওপরে নির্যাতন করতো তারা। আজ সকালে বেধরক মারধর করে বিলকিসের শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রেমের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে মেয়েদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রাজিব।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিলকিস খাতুন বলেন, আমাকে তালাক নেওয়ার জন্য প্রায়ই আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে। বিয়ের সময় আমি ৮-১০ লাখ টাকা দিয়েছি তাদের।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমাদের পরিচয় হয়। আমি আগে জানতাম না রাজিবের বউ ছিল। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে আমার দেওয়া সাড়ে ৪ লাখ টাকা দিয়ে। আজকে আমাকে বেধরক মারধর করেছে। আমি নির্যাতন সইতে না পেরে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করি। পরে বাড়ির সামনে রাস্তায় ফেলে আমাকে নির্যাতন করে। আমি তাদের বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম জানান, সকালে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারধর করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, এ ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
আরএ