ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নতুন পেঁয়াজ বাজারে, তবু দাম বাড়াতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
নতুন পেঁয়াজ বাজারে, তবু দাম বাড়াতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা বাজারে নতুন পেঁয়াজ।

ঢাকা: অনেকদিন ধরেই দেশে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক রকম বাড়তি। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর মধ্যে দেশি নতুন পেঁয়াজও আসতে শুরু করে বাজারে। ফলে দাম একটু কমতির দিকে ছিল গত কয়েকদিন। 

তবে হঠাৎ করে অবরোধের দোহাই দিয়ে আবারও পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার জাহাজের পরিবর্তে প্লেনে পেঁয়াজ আনার সিদ্ধান্ত নেয়। এসব আমদানি করা পেঁয়াজ কয়েক ধাপে দেশে আসছে। এখনও আসার অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে দেশি পেঁয়াজ ওঠা শুরু করেছে বাজারে। এতে দামও কমতে থাকে সব ধরনের পেঁয়াজের।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, খিলগাঁও, ফকিরাপুল, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কাঁচাবাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি আমদানি করা তুরস্ক ও চায়না পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, দেশি পেঁয়াজ ২০০ টাকায় ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১৮০ টাকায়। অথচ একদিন আগেও এসব বাজারে প্রতিকেজি আমদানি করা তুরস্ক ও চায়না পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, দেশি পেঁয়াজ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১৬০ টাকায়।

এ বিষয়ে খিলগাঁও বাজারের বিক্রেতা হাসিবুল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সামান্য পেঁয়াজ নিয়ে খুচরা বিক্রি করি। বেশি দামে বিক্রি করলে কিছু লাভ রেখেই তা বিক্রি করি, বেশি লাভের আশা করি না।

তবে একদিনের মধ্যে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দাম রাখা হচ্ছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বাড়তি দামে পেঁয়াজ এনেছি, বাড়তি দামে তা বিক্রি করছি।

একই দাবি করেছেন শান্তিনগর বাজারের বিক্রেতা বাবু। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম এখনো বাড়তি। তবে আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম কমবে। অবরোধ চলে গেলে দেশি পেঁয়াজও আসবে বাজারে। তখন দাম আরও কমবে।

অন্যদিকে, বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে, দামও কম এসব পেঁয়াজের। তাছাড়া, আসছে অপরিপক্ব (গাছসহ ছোট কাঁচা পেঁয়াজ) পেঁয়াজ। এসব গাছসহ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা, গাছ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।

দেশি নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় আশান্বিত ক্রেতারা। সাইফুল হক নামে এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে এখন নতুন পেঁয়াজ আসছে, এতে দাম কম হওয়ায় ভালো লাগছে। তবে, দাম আরও কম হওয়া উচিত। দেশি নতুন পেঁয়াজ পুরোপুরি বাজারে এলে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙবে।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজারে গাছসহ পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। কারওয়ান বাজারের গাউসিয়া ভাণ্ডারের (আড়ৎ) স্বত্বাধিকারী মোস্তফা কামাল বলেন, গত কয়েকদিন ধরে গাছসহ (অপরিপক্ব) পেঁয়াজ বাজারে আসছে। তবে চাহিদা বাড়ায় এখন বেশি বেশি আসছে বাজারে। এর প্রভাবে এখন চাহিদা কমছে অন্য পেঁয়াজের, দামও কমেছে সবগুলোর। এভাবে পেঁয়াজ এলে দু’-তিনদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে পেঁয়াজ বাজার।

পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় টিসিবির খোলা বাজারে ট্রাক সেলে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া বাকি সব দিনেই বিক্রি অব্যাহত রয়েছে ট্রাক সেলে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের।

এ বিষয়ে টিসিবির ডিলার রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় সরকারিভাবে ট্রাক সেলে বিক্রি চলছে অনেক আগে থেকেই। আমরা সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই পেঁয়াজ বিক্রি করছি। প্রতিদিন একেকটি ট্রাকযোগে এক হাজার কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছি। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বিক্রি অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
ইএআর/এফএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।