শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন এ বৈঠকের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে বেসরকারি টিভির যাত্রা শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে। আরও ১১টি সম্প্রচারে আসার অপেক্ষায় আছে। ১১ বছরে সাড়ে তিন গুণ বেড়েছে। প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ খাতে। টিভি নতুন প্রজন্মের মনন তৈরিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কৃষ্টি সংস্কৃতি লালনের পাশাপাশি দেশ জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, টিভি বাড়ায় বিজ্ঞাপন ভাগ হয়ে যাচ্ছে। ৪০০-৫০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন বিদেশে চলে যাচ্ছে। যা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি। সম্প্রচার মাধ্যম পুরোপুরি ডিজিটালাইজড হলে বিদেশেও বিজ্ঞাপন দেখানো যাবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপনে কর আরোপের জন্য এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের জন্য টিভিগুলোর সিরিয়াল করে দেওয়া হয়েছে। ছয় দশকে ভারতে কখনো আমাদের টেলিভিশন দেখা যেত না। আমাকে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে এ কাজটি সম্পন্ন করেছি।
তিনি বলেন, আগামী মাস থেকে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র ১২ ঘণ্টা সম্প্রচারে যাবে। কয়েক মাসের মধ্যে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র টেরিস্টরিয়াল সেবার মাধ্যমে সারাদেশে দেখা যাবে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান।
মেয়র বলেন, এখন টিভির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। আগামী দিনের টিভির চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। বেসরকারি টিভি সরকারি গাইডলাইনে সম্প্রচার হয়। দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। তাহলে দর্শকের আস্থাহীনতা তৈরি হবে না। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংবাদ পরিবেশন করা উচিত। তাহলে দর্শকের আস্থা বাড়বে। দেশ লাভবান হবে।
তিনি বলেন, সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হলে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মধ্য দিয়ে রুটি রুজি নিশ্চিত করা সম্ভব।
মো. আবদুল মান্নান বলেন, টিভির মান ধরে রাখা সহজ নয়। বিটিভি অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু বিটিভির মেধাবীরা অবসরের পর কিছুটা শূন্যতা রয়েছে। তাই বিটিভির আর্কাইভ সমৃদ্ধ করতে হবে। বিটিভি বাণিজ্যিক টিভি নয়। এটিকে সমৃদ্ধ করলে বেসরকারি টিভিগুলো ফলো করতে বাধ্য হবে।
মিডিয়া মুক্তিযুদ্ধের সরকারের অনুকূলে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেসব তরুণ টিভিতে কাজ করছে তাদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ঝুঁকি বেশি। তাদের ব্যাপারে সরকারের দিক থেকে অনেক কিছু করার আছে।
বিটিভির উপ মহাপরিচালক (সংবাদ) অনুপ কুমার খাস্তগীর বলেন, টিভির কাজ পক্ষপাতমূলক নিউজের বিপরীতে অথেনটিক নিউজ দেওয়া। টিভির নিউজ ভিজুয়াল। টিভির অপব্যবহার রোধ করতে হবে। যাতে টিভি সোশ্যাল মিডিয়ার মতো ব্যবহৃত না হয়।
বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বাসসের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি কলিম সরওয়ার, একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদার, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লতিফা আনসারী রুনা, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিক আহমেদ সাজিব। উপস্থিত ছিলেন সিইউজে সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল।
স্বাগত বক্তব্যে চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন তোতা বলেন, ১৯৬৪ সালে টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয় আমাদের দেশে। গণমাধ্যমের বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে অন্যতম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান অনুপম শীল।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
এআর/এসি/টিসি