ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সোনারগাঁয়ে ছিনতাইয়ের দেড়মাস পর মামলা নিলো পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৯
সোনারগাঁয়ে ছিনতাইয়ের দেড়মাস পর মামলা নিলো পুলিশ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে শিল্পনগরী মেঘনা ইসলামপুর এলাকায় ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ ব্যবসায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহ আলমকে কুপিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল সেটসহ ২ লাখ টাকার মালামাল ছিনতাইয়ের ঘটনার দেড় মাস অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। 

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে সোমবার (২৫ নভেম্বর) সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা করেন প্রতিবন্ধী শাহ আলম।  

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় রমিজ উদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও একই ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহ আলম মেঘনা ইসলামপুর এলাকায় ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশের ব্যবসা করেন।

 

গত ১৪ অক্টোবর রাত ১১ টার দিকে শাহ আলম বাড়ি ফেরার পথে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ওই এলাকার ফজলুল হকের ছেলে ছিনতাইকারী রুবেল, ডালিম, রিপনসহ আরো অজ্ঞাত ৪-৫ জনের একটি দল এলোপাথাড়িভাবে তাকে ছুরিকাঘাত করে। ওই সময় শাহ আলম ছিনতাইকারী রুবেলকে ঝাপটে ধরলে তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। এ সময় তার কাছে থাকা নগদ ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, ৯টি মোবাইল ফোন সেট, পেনড্রাইভ, সিমকার্ডসহ ২ লাখ ১২ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা শাহ আলমকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।  

এদিকে ঘটনার পরদিন রাতে পুলিশ ছিনতাইকারী রুবেলকে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। তবে প্রতিবন্ধী শাহ আলম থানায় মামলা করতে গেলে তা নেয়নি পুলশ।  
বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য শাহ আলমকে প্রস্তাব দেওয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
প্রতিবন্ধী শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগ করার পর মামলা না নিয়ে সোনারগাঁ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল বিষয়টি এলাকায় মীমাংসার জন্য করার জন্য প্রস্তাব দেন।  

‘এ বিষয়টি পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সেলিম রেজাকে অবগত করি। সেলিম রেজা গত ১ নভেম্বর একটি বিচার সালিসের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পান। পরে ছিনতাইকারীদের সালিসে জরিমানা করেন। ’ 

তিনি বলেন, ছিনতাইকারীরা জরিমানা না দিয়ে উল্টো পিরোজপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য সেলিম রেজার বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ করে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের এসআই মাসুদ রানা সেলিম রেজাকে গ্রেফতার করে থানা নিয়ে যাওয়ার পথে আষাঢ়িয়ার চর এলাকায় ছেড়ে দেয়।
‘এদিকে রোববার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মাসুম বিষয়টি জানতে পেরে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার জন্য ওসিকে বলেন। পরে পুলিশ মামলা নেয় পুলিশ। ’
পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। একজন প্রতিবন্ধী অভিযোগ দিয়ে পুলিশের কাছে কোনো বিচার পাচ্ছে না। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।
এদিকে পিরোজপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য সেলিম রেজা বলেন, সঠিক বিচার করার পর আমাকে বিনা কারণে পুলিশ হয়রানি করেছে। পরে চাপের কারণে আমাকে আষাঢ়িয়ার চর এলাকার ছেড়ে দেয়।

তবে সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা বলেন, সেলিম মেম্বারকে গ্রেফতার করিনি। তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম।
  
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ছিনতাইয়ের অভিযোগটি আমার জানা ছিল না। জানার পর মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।