ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুন্সিগঞ্জ আ’লীগ নেতাদের দুর্নীতি তদন্ত করবে দুদক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৯
মুন্সিগঞ্জ আ’লীগ নেতাদের দুর্নীতি তদন্ত করবে দুদক

ঢাকা: মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির স্ত্রী, সাধারণ সম্পাদকসহ কতিপয় নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। সম্প্রতি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি দখল, টেন্ডারবাজি ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয় করার অভিযোগ করেছেন দুদকে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ আসার পরই তা তদন্ত করা হয়। তদন্তের পরে দোষী হলে আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

দুদক সূত্র জানায়, গত ২১ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী সোহানা তাহমিনা, সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনিস উজ্জামান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া আফসু, মিরকাদিম পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিন, পঞ্চসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা ও মুন্সিগঞ্জের রামপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি দখল, টেন্ডারবাজি, অস্ত্র ব্যবসার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে।  

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মহিউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী সোহানা তাহমিনা জেলা শহরে হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় জেলা পরিষদের ১০০ শতাংশ জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন। পুলিশ লাইন এলাকায় ২০টি দোকানে নির্মাণ করেছেন। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় দুটি বাড়ি রয়েছে। উত্তর কোটগাঁওতে ১৫০ শতাংশ জমি কিনেছেন।

এতে আরও বলা হয়, মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান দলের পদ-বাণিজ্য ও জমি দখল করে বিক্রি করে কয়েক বছরে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সদর উপজেলার বজ্রযোগিনীতে বাগান বাড়ি, ঢাকার গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট এলাকায় তিনটি বাড়ি রয়েছে তার।

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া আফসু ১০ বছরে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। দেশি-বিদেশি ব্যাংকে তার ও স্ত্রীর নামে শত কোটি টাকা এবং ঢাকার শনির আখড়ায় ৫০ কোটি টাকার ৩০ শতাংশ জমিতে একটি ৫ তলা বাড়ি রয়েছে।

এছাড়া উত্তরায় মেয়ের নামে প্রায় ৬০ কোটি টাকার বিলাসবহুল দুটি ফ্ল্যাট, মালিবাগে ৩ কোটি টাকার একটি ফ্ল্যাট এবং মুন্সিগঞ্জ শহরের মানিকপুরে রয়েছে তার দুটি বাড়ি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫ লাখ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত দলের মনোনয়ন বিক্রি করে অবৈধভাবে উপার্জন করেন তিনি।

আর মুন্সিগঞ্জ জেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা পুরান ঢাকায় বিএনপি আমলে অস্ত্র নিয়ে ধরা পড়েন। অনেক হত্যা মামলারও আসামি তিনি। মালয়েশিয়ায় তার দুটি বাড়ি এবং ঢাকার উত্তরাতে স্ত্রীর নামে অবৈধভাবে একাধিক ফ্ল্যাটসহ রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।  

একই সঙ্গে দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুন্সিগঞ্জ রামপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখ ঢাকার বাদামতলী, বনানী ও গুলশানে ৪টি বাড়ি কিনেছেন। দুই স্ত্রীর মাধ্যমে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরেও দেওয়া হয়েছে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
ডিএন/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।