ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিএমপিতে ১৫ মাসে যানবাহনের বিরুদ্ধে অর্ধলক্ষ মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
বিএমপিতে ১৫ মাসে যানবাহনের বিরুদ্ধে অর্ধলক্ষ মামলা ছবি: প্রতীকী

বরিশাল: বরিশাল মেট্রোপলিটনে (বিএমপি) ১৫ মাসে যানবাহনের বিরুদ্ধে অর্ধলক্ষ মামলা হয়েছে। এছাড়া, জরিমানা আদায় করা হয়েছে সাড়ে তিন কোটি টাকা।

দিনদিন বাড়ছে বরিশাল নগরসহ দক্ষিণাঞ্চলে যানবাহনের সংখ্যা। আর পদ্মাসেতু চালু হলে এবং পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হলে যানবাহনের এ চাপ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

যদিও জনবল সঙ্কটে থাকা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ গত এক বছরে নগর ট্রাফিকিং ব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন। যারমধ্যে মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট পরিধান শতভাগ নিশ্চিত করা এবং যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন  ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালনায় উদ্বুদ্ধ করার বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য। তবে বিটমানির মাধ্যমে অবৈধ যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ যেমন হয়নি তেমনি ব্যাপক অভিযান চালিয়ে অবৈধ গাড়ি আটক করলেও তুলনামূলকভাবে কম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে থ্রি হুইলার যানের বিরুদ্ধে।  

গত ১০ মাসে আটকের তালিকায় মোটরসাইকেলই অর্ধেকের বেশি। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৬৩৭টি গাড়ি আটক করে ট্রাফিক পুলিশ। এর মধ্যে ৫৩৮টি মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার ২৭টি, বাস ও ট্রাক ৪২টি, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ২২টি এবং টমটম ৮টি আটক করা হয়। এর মধ্যে ট্রাফিক অফিসে মামলা নিস্পত্তি করা হয় মোটরসাইকেল ৪৮৬টি, থ্রি হুইলার ২১টি, বাস ট্রাক ৪১টি এবং ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ১টি।  

এছাড়াও অভিযানে ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশার ১৪৫টি মোটর, ৫৭৯টি ব্যাটারি, ১টি কাঠের ভ্যান এবং ১৪টি গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ করা হয়। আর জব্দ যানবাহনের মালামাল আদালতের মাধ্যমে নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলেও গত দুই বছরে ২৭৬টি অবৈধ যানবাহন ধ্বংস করা হয়েছে। যার মধ্যে অবৈধ অটোরিকশা ও  ইজিবাইক রয়েছে।

গত ১৫ মাসে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ২০১৭ ও ২০১৮ সালের কিছু মামলাসহ নিষ্পত্তি করা ৫০ হাজার ১৮৩টি মামলায় ৩ কোটি ৫০ লাখ ৫৯ হাজার ৯৪১ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। এছাড়া মেট্রো এলাকায় গত ১৫ মাসে মোট ৪৮ হাজার ৮৩২ টি মামলা করেছে এ বিভাগের সদস্যরা। যার অনুকুলে ৩ কোটি ১১ লাখ ২২ হাজার ১১৫ টাকার জরিমানা করা হয়েছে।  

এর আগের কোনো বছরে এ ধরনের এতো অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জরিমানা আদায় হয়নি কখনো। যদিও নানা পরিবহনে নানা অভিযোগের বিষয়টি দেখেও না দেখার অভিযোগ রয়েছে এ বিভাগের সদস্যদের প্রতি। তবে বিভাগের প্রতিটি সদস্যকে দুর্নীতি ও ঘুষমুক্ত রেখে জনগণের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করার কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) খায়রুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, একটি নগরে ট্রাফিক ব্যবস্থা হচ্ছে রক্তের মতো। যদি শরীরের কোন অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে যেমন সমস্যা দেখা দেবে, সে অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তেমনি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কোনো এক জায়গায় ত্রুটি দেখা দিলে গোটা শহরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। আমরা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষকে বৈধ গাড়ি, নিয়ম মেনে চালনার পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা চাই না মামলা করতে। আমরা চাই মানুষ নিজ থেকে সচেতন হয়ে গাড়ি চালনা করুক। যে চিন্তা সরকারও করছে।  

ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ট্রাফিক বিভাগে ১৮৭ পদ থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ১৪০ জন। এর মধ্যে একজন অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনারের পদ ফাঁকা রয়েছে। এছাড়াও, টিআই পদে সাতজনের স্থানে তিনজন, এএসআই পদে ১২ জনের স্থানে তিনজন এবং সার্জেন্ট পদে ২৫ জনের স্থানে ১৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
এমএস/এফএম 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।