ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এজলাসে ‘আইএসের টুপি’ পরার বিষয়টি তদন্ত করা উচিত

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
এজলাসে ‘আইএসের টুপি’ পরার বিষয়টি তদন্ত করা উচিত

ঢাকা: এজলাসে ‘আইএসের প্রতীকবাহী টুপি’ পরার বিষয়টি তদন্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু।

তিনি বলেন, ‘এদেশে আইএস’র কোনো অস্তিত্ব নেই। জঙ্গিরা বিক্ষিপ্তভাবে পরিকল্পনা করে এ হামলা চালিয়েছে।

দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেতে তারা এটি চালিয়েছে। ’

বুধবার (২৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর এমন কথাই বলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু।

‘তারা বোঝাতে চেয়েছে আইএসের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রমাণ মিলে নাই। ’

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তষ্ট। এ রায় কার্যকর হলে ভবিষ্যতে কেউ এরকম নৃশংস কাজ করার সাহস পাবে না।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসামিরা চাইলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবে। এ সুযোগ তাদের রয়েছে।

বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান আলোচিত গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা মামলায় আট আসা‌মির মধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দি‌য়ে‌ছেন। বেকসুর খালাস পেয়েছেন একজন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসা‌মিরা হ‌লেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

‌দে‌শের ই‌তিহা‌সে অন্যতম নৃশংস এ হামলায় ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয়, একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক ও দু’জন বাংলাদেশিসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম।

হামলার পর জিম্মি অবস্থার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছিলেন পাঁচ জঙ্গি। তারা হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জল।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও ৮ সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।  

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি।

ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

একই বছরের ২৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান।

এক বছরের বিচারকালে মামলার মোট ২১১ জন সাক্ষীর ১১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে গত ১৭ নভেম্বর এ মামলার বিচারকাজ শেষ হয়। ওইদিনই আদালত রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
এসএ/

আরও পড়ুন
** আদালতে হলি আর্টিজান মামলার আসামিরা
**হলি আর্টিজানে হামলার পর বদলে গেছে গুলশানের নিরাপত্তা
**গুলশান হামলা: আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি পরিবারের
**‘দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করতেই হলি আর্টিজানে হামলা’
**যেভাবে সফল হয় ‘অপারেশন থান্ডার বোল্ট’
**এখন যেমন গুলশানের সেই হলি আর্টিজান বেকারি
**এজলাসে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত, থাকবেন বিদেশি পর্যবেক্ষক
**আদালত এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা
**আদালত এলাকায় উৎসুক জনতার ভিড়
**আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা চান সাধারণ মানুষ
**হলি আর্টিজান হামলার ‘নীল নকশা’
**প্রস্তুত আদালত, প্রস্তুত গণমাধ্যম
**সেদিন যা ঘটেছিল হলি আর্টিজানে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।