ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক নির্মাণের ২ সপ্তাহের মধ্যেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
সড়ক নির্মাণের ২ সপ্তাহের মধ্যেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং সড়কে উঠে গেছে ঢালাই করা পিচ। ছবি: বাংলানিউজ

নরসিংদী: নরসিংদীর শিবপুরে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে সড়ক নির্মাণ করা হলেও তা গ্রামবাসীর কোনো কাজে আসছে না। নতুন সড়ক নির্মাণের দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই রাস্তা থেকে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। ফলে ওই সড়কে ফের খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, সড়ক নির্মাণের নামে সরকারের প্রায় ৬০ লাখ টাকা লুটপাট করা হয়েছে। মানহীন ইট-পাথর, বিটুমিনসহ নিম্নমানের পণ্যসামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক নির্মাণ করায় এ বেহাল দশা।

এতে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। তাই এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গ্রামবাসী। ফলে এ সড়কের সব রকম বিল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নরসিংদীর শিবপুরের বাঘাবো ইউনিয়নের শ্রীফুলিয়া থেকে বিরাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়ক ভেঙে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে গ্রামের লোকজনদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সবজিসহ কাঁচামাল সরবরাহ। তাই দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন গ্রামবাসী। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এলজিইডি সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।  

গত অর্থ বছরে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ভিলেজ রোড রিহ্যাবিলিটেশন (ভিআরআরপি) প্রকল্পের আওতায় শ্রীফুলিয়া থেকে ওহাব সরকারের বাড়ি পযর্ন্ত ২৩৪০ মিটার সড়ক পুনঃনির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শিবপুরের এশা এন্টারপ্রাইজ ৫৮ লাখ ১৪ হাজার ৪৭৪ টাকায় কাজটি করার অনুমোদন পায়। দুই সপ্তাহ আগে সড়কের কার্পেটিংসহ সব কাজ সম্পন্ন করা হয়। কাজ শেষ করার এক সপ্তাহ পার হতে না হতেই সড়ক থেকে পিচঢালাই (কার্পেটিং) উঠে যাচ্ছে। তাই ক্ষোভে ফুসে উঠেছেন গ্রামবাসী।

সড়কে উঠে গেছে ঢালাই করা পিচ।  ছবি: বাংলানিউজশ্রীফুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বায়েজিদ মিয়া বলেন, সরকার জনগণের সুবিধার জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি এসব উন্নয়ন কাজের নামে সরকারের টাকা লুটপাট করছে। তাদের কাজের মান এতই নিম্ম যে সড়ক নির্মাণের এক সপ্তাহের মধ্যে সড়কের কাপের্টিং উঠে যাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে সড়ক পুনঃনির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

বিরাজনগরের বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, খুবই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়কের কাজ করা হয়েছে। যার কারণে নির্মাণের পর থেকেই কার্পেটিং উঠে যেতে শুরু করেছে। আগে সড়কের অবস্থা বেহাল থাকায় খুবই কষ্ট করে যাতায়াত করেছি। এখন নতুন সড়ক নির্মাণের পরও আমাদের দুর্ভোগ থেকেই যাচ্ছে।

এদিকে এশা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী কিরণ মিয়া বলেন, ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে কি কারণে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কের বিটুমিনও পরীক্ষা করা হচ্ছে যদি বিটুমিন দূর্বল হয় তাহলে নতুনভাবে সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হবে। সড়কের সমস্যাগুলো চিহ্নত করে শিগগিরই তা সমাধান করা হবে।

নরসিংদী এলজিইডির নিবার্হী প্রকৌশলী শেখ মো. আবু জাকির সেকান্দার বলেন, সড়কের ব্যাপারে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছে। তাই কাজের সব বিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সড়কের যেসব জায়গার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে সেসব জায়গায় নতুনভাবে মেরামত করা হলেই ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।