ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফুলের বর্ণে-গন্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
ফুলের বর্ণে-গন্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা লাল-সবুজের পতাকা হাতে শিশু নুসাইবা। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: সবার হাতে ফুল। গোলাপ-গাঁদা-রজনীগন্ধা। তাদের রং লাল-হলুদ-সাদা। এসব বর্ণ আর পরিচিতির বাইরেও আছে অসংখ্য রঙের অজস্র ফুলের ঘ্রাণ। আর থাকবেই বা না কেন? এই বর্ণ আর পরিচয় অর্জনের জন্যই যে বাঙালির পরিচিতি বিশ্বজোড়া।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে নানান রঙের ফুল হাতে ঢল নামে রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিসৌধে। সেসব ফুলের বর্ণে-গন্ধে মিশে আছে শোক, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা।

আছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়।

সকালে বাবার সঙ্গে ফুল আর লাল-সবুজের পতাকা হাতে শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিসৌধে এসেছে শিশু নুসাইবা।

মুখে লাজুক হাসি ফুটিয়ে মৃদু স্বরে বাংলানিউজকে সে বলে, আমি তো শহীদদের ভালোবাসি, তাই তো ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি।

শুধু নুসাইবা নয়, দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আণিকার কণ্ঠেও একই কথা। সে বলে, সমাধিসৌধে যেসব শহীদরা ঘুমিয়ে আছেন তারা তো ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। তাই আজ ফুল দিয়ে তাদের স্মরণ করতে এসেছি। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।  ছবি: জিএম মুজিবুরশুধু আণিকা বা নুসাইবা নয়, তাদের মতো অসংখ্য শিশুরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে। এসেছেন সাধারণ মানুষও। তাদের কাছে আজকের দিনে ফুল শুধু ফুল নয়, ভালোবাসার মতো শোক আর শ্রদ্ধার প্রতীক।

বুদ্ধিজীবী সমাধিসৌধে সকালে সাজ্জাদ হোসেন নামে বেসরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয়।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। সেই শ্রদ্ধা প্রকাশের একটি মাধ্যম হলো পুষ্পস্তবক অর্পণ। ফুল শুদ্ধ এবং সুন্দর। তাই তাদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুলের থেকে সুন্দর আর কী হতে পারে! তবে আজকের ফুলের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার সঙ্গে মিশে আছে শোকও।

বাঙালি বীরের জাতি, তাইতো সব শোককে আজ শক্তিতে পরিণত করে তারা স্বপ্ন দেখছেন একটি আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। তারা বলছেন, এবার আর আক্ষেপ নয়, পেছনে তাকানো নয়, এখন সময় সামনে এগিয়ে যাওয়ার।

ইতোমধ্যে স্বজন হারানোর বেদনায় আচ্ছন্ন মন আর বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের রায় কার্যকরের স্বস্তি তৈরি করেছে এক ভিন্ন আবহ। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানিয়ে সচেতন নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান সবার।

একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর স্বাধীনতাযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সঙ্গে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী দেশের অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাদের নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়। পরে মিরপুরের রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গণকবরে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।  ১৬ ডিসেম্বর আত্মীয়রা বধ্যভূমিগুলোতে স্বজনের মরদেহ শনাক্ত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।