বুধবার (৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র্যাব-১১’র কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দুই বোনকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা এবং ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত আসামি মো. আলমগীর খাঁকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার কাটা কুশিয়া এলাকার বাসিন্দা। ২০১২ সালে তিনি ঢাকা সেনানিবাসের কচুক্ষেত আর্মি স্টোরে চাকুরি করতেন। সেখানে চাকুরি করার সময় তিনি সেনাবাহিনীর ভুয়া আইডি কার্ড ও ট্রাওজার সংগ্রহ করেন। পরে তিনি বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন।
এরই ধারাবাহিকতায় তিনি সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে মিথ্যা পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খুলে ভিকটিমদের সঙ্গে ভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। ২৫ ডিসেম্বর গ্রেফতার আসামি ভিকটিমের বাড়িতে কৌশলে অবস্থান করেন।
পরে কৌশলে ভিকটিমের বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি তার মোবাইলে ধারণ করেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভিকটিমকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাদের বাড়ি হতে চলে যান।
পরবর্তীকালে আসামি আলমগীর বিভিন্ন সময়ে ভিকটিমদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন এবং ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তার বিভিন্ন দাবি পূরণে বাধ্য করেন।
৩০ ডিসেম্বর আলমগীর ভিকটিম দুই বোনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অপহরণ করে ঢাকা থেকে বরিশালগামী কীর্তনখোলা লঞ্চের কেবিনে উঠিয়ে বরিশালে রওনা দেন। রাতে আসামি আলমগীর কেবিনের ভিতর পর্যায়ক্রমে ভিকটিম দুই বোনকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তাদের পরনের কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন ও ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ভিকটিমদের মারধর ও হত্যার চেষ্টা করেন। এছাড়াও তিনি উভয় ভিকটিমের সঙ্গে জোর করে আপত্তিকর ছবি তার মোবাইলে ধারণ করেন।
পরদিন ভোরে ভিকটিমদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনতাই করে তিনি লঞ্চ থেকে পালিয়ে যান। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভিকটিমদেরকে তাদের নিজ বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়।
ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৭ জানুয়ারি বিকেলে আলমগীরকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর বর্ণিত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন বলে জানায় র্যাব।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২০
এবি