শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৯ এর বিচারক জান্নাতুল রাফিন সুলতান কাছে মামলার এক মাত্র আসামি সোলাইমান ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আসামিকে সোলাইমানকে রাতেই আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) রিফাত রহমান শামীম সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে আসামি সোলাইমান স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী আসামি সোলাইমানের সঙ্গে তার মেঝ ভাই মজনুর স্ত্রী পারভীন আক্তারের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত তিন মাস আগে সোলাইমান মালয়েশিয়া থেকে পড়াশোনা করে দেশে ফেরেন। এরপর ভাবী পারভীনের সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক আরও গাড়ো হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সোলাইমানকে বিয়ে জন্য চাপ দেয় পারভীন। কিন্তু এতে সোলাইমান রাজি না হওয়ায় দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও উত্তেজনার সৃস্টি হয়। এরই জের ধরে বুধবার (৮ জানুয়ারি) দিনগত রাতে ধারালো ছুরি দিয়ে পারভীনের গলায় আঘাত করে তাকে খুন করেন সোলাইমান। ঠিক ওই সময়ই ভাতিজা নূর দেখে ফেললে তাকেও একইভাবে হত্যা করা হয়।
নিহত নূরের দাদা ক্বারী আব্দুল রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সোলাইমানের মতো ভালো ছেলে এ গ্রামে আর একটিও নেই। পুলিশ তাকে ফাঁসানোর জন্য ধরে নিয়ে গেছে। তার সঙ্গে আমার পরিবারের কাউকে দেখাও করতে দেন না। সোলাইমান ষড়যন্তের শিকার।
সাটুরিয়ার উত্তর কাউন্নারা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মজনুর স্ত্রী পারভীন ও তার ছয় বছরের ছেলে নূর তাদের দোতলা ফ্লাট বাসায় বুধবার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমায়। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে নূরের দাদী রোমেনা বেগম নাতি নূরকে ডাকতে যান। ডাকতে গিয়ে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। ভেতরে ঢুকে দেখেন খাটের ওপর নাতি নূর ও তার ছেলের স্ত্রী পারভীনের নিথর দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে মা ও ছেলে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, সাটুরিয়াতে মা ও ছেলে জোড়া খুনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সোলাইমান জড়িত। পরে তাকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন সোলাইমান।
শুক্রবার দুপুরে আসামি সোলাইমানকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক জান্নাতুল রাফিন সুলতান কাছে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামলার একমাত্র আসামি সোলাইমান। এ ঘটনায় নিহত পারভীনের মা মজিরন বেগম বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে সাটুরিয়া থানা পুলিশ জোড়া খুনের আলামত সংগ্রহ করেছে। ময়নাতদন্তে প্রতিবেদনে ধর্ষণে কোনো আলামত পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশ জানায় পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেদন হাতে পেলে জানা যাবে প্রকৃত কারণ।
বৃহস্পতিবার রাতে মা ও ছেলেকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২০
এসআরএস